এক সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের পরিবর্তে আরেক সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের শাসন নয় সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা মুৎসুদ্দিপুঁজি বিরোধী শ্রমিক-কৃষক-জনগণের রাষ্ট্র, সংবিধান ও সরকার প্রতিষ্ঠার লড়াইকে অগ্রসর করুন।

এক সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের পরিবর্তে আরেক সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের শাসন নয় সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা মুৎসুদ্দিপুঁজি বিরোধী শ্রমিক-কৃষক-জনগণের রাষ্ট্র, সংবিধান ও সরকার প্রতিষ্ঠার লড়াইকে অগ্রসর করুন।

রূপপুর, রামপালসহ সাম্রাজ্যবাদীদের সাথে সম্পাদিত জাতীয় ও গণস্বার্থবিরোধী সকল চুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলুন।

৭ম জাতীয় সম্মেলন
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
কাজি বশির মিলনায়তন (মহানগর নাট্যমঞ্চ), গুলিস্তান, ঢাকা।

সংগ্রামী বন্ধুগণ,
অভিনন্দন গ্রহণ করুন। জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এর সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিরাজ করছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে চরম অস্থিরতা। এই অস্থিরতার মূল কারণ হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী পুঁজিবাদী বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার ফলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ধস সৃষ্টি হয়েছে। সেই ধস থেকে উদ্ধার পেতে উদ্ধার, উদ্দীপকসহ বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি গ্রহণ করেও মন্দার পতনকে রোধ করা যাচ্ছে না। মন্দা যখন মহামন্দার দিকে ধাবিত হচ্ছে, তখন বাজার ও প্রভাব বলয় বিস্তার এবং শক্তি সম্পর্কের পুনর্বিন্যাস নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী শিবিরে আন্তঃদ্বন্দ্ব-সংঘাত, প্রতিযোগিতা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে এবং চলছে ব্যাপক সামরিক প্রস্তুতি। প্রাক-বিশ্বযুদ্ধ বা বিশ্বযুদ্ধের মহড়া হিসেবে আমরা প্রত্যক্ষ করছি বাণিজ্যযুদ্ধ, মুদ্রাযুদ্ধ, স্থানিকযুদ্ধ এবং আঞ্চলিকযুদ্ধ-যা প্রতিনিয়তই পৃথিবীর দেশে দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটে চলেছে। ফলে বিশ্বযুদ্ধের বিপদ ক্রমাগত ঘনীভূত হয়ে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। যার প্রভাব পড়ছে আমাদের দেশেও। বাংলাদেশ হচ্ছে নয়া ঔপনিবেশিক আধা সামন্তবাদী একটি দেশ। আমাদের দেশের সমস্যা-সংকট, দুঃখ-দুর্দশার জন্য দায়ী হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ, আমলা-দালালপুঁজির নির্মম শোষণ। আমাদের দেশে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও মার্কিনের দালাল নয়া ঔপনিবেশিক আধাসামন্তবাদী ভারতের প্রভাব থাকা সত্ত্বেও এখানে সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়া এবং পুঁজিবাদী চীনের প্রভাব ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। যার ফলে সরকারের ভূমিকার ক্ষেত্রে উভয় শক্তির সাথে আপাতদৃষ্টিতে সমঝোতা ও টানাপোড়েন দৃশ্যমান হলেও এখনও পর্যন্ত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রাধান্যই বজায় রয়েছে। এর পাশাপাশি ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপি’র নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আশীর্বাদ নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মরিয়া। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ, অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও পুঁজিবাদী চীনও তাদের সাথে সম্পর্ক রাখছে। সাম্রাজ্যবাদের এই প্রভাব আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিবিন্যাসের মধ্য দিয়ে যে কোন সময় পরিবর্তন ঘটাতে পারে। নানাভাবে এই প্রভাব বৃদ্ধির আঁচ পাওয়া যায়। রাশিয়ার সাথে অস্ত্রক্রয় চুক্তি, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন চুক্তি, টিকফার আদলে চুক্তি, বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। যদিও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদও তার প্রভাবকে নিরঙ্কুশ রাখার স্বার্থে তার কার্যক্রমকে অব্যাহত রাখতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ প্রচেষ্টারই অংশ হিসেবে মার্কিন নির্বাচনের একেবারে আগ মূহুর্তে দিয়ে জন কেরির উপমহাদেশ সফর। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সাথেও যৌথ অংশিদারিত্ব চুক্তি, সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতা চুক্তি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি, যৌথ অংশিদারিত্ব সংলাপ, নিরাপত্তা বিষয়ক সংলাপ ইত্যাদিও কার্যকরি ও সচল রয়েছে।

সাথীরা,
একদিকে সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়া, পুঁজিবাদী চীন ও সাম্রাজ্যবাদের দালাল নয়াঔপনিবেশিক-আধাসামন্তবাদী ভারত সমর্থন দিয়ে চলেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকারকে। অন্যদিকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদসহ পশ্চিমের বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদীদের সমর্থন রয়েছে বিএনপি’র নেতৃত্বে গঠিত ২০দলীয় জোটের প্রতি। সাম্রাজ্যবাদীদের এই উলঙ্গ সমর্থন এবং প্রভাব বিস্তারের উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার কারণে আমাদের দেশে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ক্ষেত্রে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চলমান এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করে সরকার নির্মম স্বৈরাচারী রূপ পরিগ্রহ করে জনগণের ঘাড়ের উপর চেপে বসেছে।

শ্রমিক কৃষক জনগণের শ্রমে ঘামে যে উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হয় তার সিংহভাগই লুটপাট করে নেয় সাম্রাজ্যবাদ ও তার এদেশীয় দালাল জোতদার-মহাজন, কমিশনভোগী ও দুর্নীতিবাজ আমলারা। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তাদের শীর্ষ নেতারাই এই লুটপাটের সাথে জড়িত থাকে। উন্নয়নের নামে চলতে থাকে লুটপাটের মহোৎসব। এই লুটপাট এখন মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে। স্বয়ং অর্থমন্ত্রী পর্যন্ত বলতে বাধ্য হয়েছেন, এখন পুকুরচুরি নয়, সাগর চুরি হচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে। এক হলমার্কই সোনালী ব্যাংক থেকে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লোপাট হয়ে গেছে ৮০০ কোটি টাকা।

কৃষক তার উৎপাদিত ফসল নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। যার ফলে ক্রমাগত মহাজন ও এনজিওসহ নানাভাবে ঋণের জালে আবদ্ধ কৃষক তার কৃষিকাজ পরিত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে। ঋণের দায় মিটাতে গিয়ে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হয়ে ক্রমশ ভূমিহীন কৃষকে পরিণত হচ্ছে। গ্রাম থেকে উচ্ছেদ হয়ে শহরের ভাসমান মানুষের দলে ভিড়ে দিনমজুরি করে কোন রকমে দিনাতিপাত করে চলেছে। এদেশে ভারী শিল্প (যন্ত্র-যন্ত্রাংশ উৎপাদন হয় এমন শিল্প) কোনো কালেই গড়ে উঠেনি। হালকা শিল্পক্ষেত্রের অবস্থা ক্রমাগত নাজুক হয়ে চলেছে। আমাদের দেশের উৎপাদিত কাঁচামাল অর্থাৎ কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা বিশেষ করে পাট, রেয়ন, কাগজকল বন্ধ হয়ে গেছে। গ্রামীণ তাঁতশিল্প অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন চিনি শিল্প বলে যে কলকারখানা চালু ছিল সেটিও বন্ধের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।

বৈদেশিক বাণিজ্যে চলছে ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি। ফলে জনগণের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হয়ে যাচ্ছে। ওভার ইনভয়েসিং এর নামে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হয়ে যাচ্ছে। দেশীয় ব্যবসা বাণিজ্যের নামে চলছে সিন্ডিকেটের দাপট। উৎপাদক বঞ্চিত হচ্ছে ন্যায্য মূল্য থেকে, ভোক্তা ঠকছে উচ্চমূল্যে ভোগ্যপণ্য ক্রয় করে। পোয়াবারো মধ্যস্বত্বভোগী নামক সরকারি দলের বিভিন্ন সংগঠন ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের। একদিকে সরকার উপর্যুপরি বাড়িয়ে চলেছে গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের মূল্য; অন্যদিকে গাড়ি ভাড়া, বাড়ি ভাড়া বেড়ে চলেছে।

লগ্নিপুঁজি ও দালালপুঁজির স্বার্থে গড়ে ওঠা গার্মেন্টস শিল্পের অবস্থাও খুবই করুণ। এই শিল্পে কর্মরত লক্ষ লক্ষ শ্রমিক জীবনের ঝুঁকি মোকাবেলা করে কাজ করে যাচ্ছে। এখানে জীবনের নিরাপত্তা নেই। চাকুরির নিরাপত্তা নেই। সর্বোপরি নেই বাঁচার মতো কোন বেতন কাঠামো। নেই অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার স্বাধীনতা। অঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠিত হবার অধিকার। কখনো কখনো বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা পথে নামলে তাদের ওপর নেমে আসে মধ্যযুগীয় পৈশাচিক নির্যাতন। কাজ করতে গিয়ে আগুনে পুড়ে, কারখানা চাপা পড়ে জীবন দিতে হয়। আবার ন্যায্য বেতনের অভাবে ক্ষুধার আগুনে নিত্য জ্বলতে হয় আর নিজের শ্রমের মূল্য চাইতে গেলে সইতে হয় নির্মম নিপীড়ন। এমনি এক দুর্বিষহ মানবেতর জীবন যাপন করছে এদেশের গার্মেন্টস শ্রমিক। এ শুধু গার্মেন্টস শ্রমিকের অবস্থা নয়, বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমিকদের এটিই এখন বিধিলিপি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নৌযান শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক, চা, পরিবহন, পাদুকা, বারকী, স’মিল, চাতাল, নির্মাণ শ্রমিক যেদিকেই তাকানো যাক না কেন সর্বত্রই একই অবস্থা বিরাজমান। বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে চলছে হকার উচ্ছেদ। এরা যে শ্রমিক এই পরিচয়ে পরিচিত হবার যে ন্যূনতম শর্ত সেটিও আজ উপেক্ষিত। জীবনকে বাজী রেখে ভিটেমাটি বিক্রি করে যারা বিদেশ বিভুঁইয়ে গিয়ে অমানুষিক শ্রম করে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করে- সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে বিদেশে চাকরি খুইয়ে আত্মগোপনে থেকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে কপর্দকহীন অবস্থায়। নারীবাদের বিস্তার ঘটানো হলেও নারীদের উপরে অন্যায়-অত্যাচার, ব্যভিচার বন্ধে কার্যকরি কোন ব্যবস্থা নেই। নারীর মুক্তি যে সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রামে নারী-পুরুষের সম্মিলিত উদ্যোগেই কেবল সম্ভব সেই সত্যকে বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে।

প্রিয় সাথীরা,
শিক্ষা ক্ষেত্রের অবস্থা আরও ভয়াবহ। শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়ন ও সংস্কারের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। জিপিএ’র নামে চলছে এক মহাকেলেঙ্কারী। পুরো শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। শিক্ষা আজ আর অধিকার নয়। শিক্ষা এখন পণ্যে পরিণত হয়েছে। বাড়ছে ভ্যাটের চাপ। শিক্ষার বাণিজ্য এখন আর কোন অছ্যুৎ শব্দ নয়। যার টাকা আছে তারই শিক্ষা পাবার অধিকার আছে। স্বাস্থ্য এখন আর জনগণের বিষয় নয়, সেখানেও যার বিত্ত আছে তার স্বাস্থ্য পরিসেবা পাবার অধিকার আছে। সাংস্কৃতিক বিষয়ও আজ আর কোন পরিশীলিত বিষয় নয়, এটিও আজ বাণিজ্যের পসরায় রূপ নিয়েছে। অপসংস্কৃতির ছোবলে দেশ ক্ষতবিক্ষত, মাদকের কবলে পড়ে যুবসমাজ আজ ঝিমুচ্ছে। অন্যদিকে মধ্যযুগীয় পশ্চাদপদ, সাম্প্রদায়িক, অদৃষ্টবাদ কপালসর্বস্ব সংস্কৃতির ছোবলে আক্রান্ত হয়ে গোটা সমাজ ধ্বংসের পথে ধাবিত হচ্ছে। দেশে যখন এই অবস্থা বিরাজমান তখন এরই মাঝে বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদ সৃষ্ট জঙ্গিবাদ নামক এক ছায়াশক্তির আবির্ভাব ঘটিয়ে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। যার থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়।

জনগণের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার বলে যা বোঝায়- বলতে গেলে তার বিন্দুমাত্র আর অবশিষ্ট নেই। বাক স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা বলে কিছুই আজ আর থাকছে না। সারা দেশব্যাপী সরকার আর তার পেটোয়া বাহিনীর অত্যাচারে জনগণ দিশাহারা। জনগণের জানমালের কোনোই নিরাপত্তা নেই। প্রচলিত বিচারও আজ উপেক্ষিত। গুম, ক্রসফায়ার, এনকাউন্টার ইত্যাদির নামে চলছে নির্বিচারে মানুষ হত্যা। যেকোন মুহুর্তে যে কেউ নাই হয়ে যেতে পারে, এর জন্য সরকারকে কারও কাছে কোন জবাবদিহি করতে হবে না। এমনি এক বর্বর সমাজে আমরা আজ বসবাস করছি। সমাজে বর্বরতার বিস্তার এতই প্রকট যেখানে নৈতিক মানবিক মূল্যবোধ তলানিতে এসে ঠেকেছে।

সংগ্রামী সাথীরা,
সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালরা একদিকে জঙ্গিবাদ নামক জুজুর ভয়, অন্যদিকে উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মাদনা সৃষ্টি করে চলেছে। বর্তমান মহাজোট সরকার একের পর এক জাতীয় ও গণবিরোধী কার্যক্রম পরিচারলনা করে চলেছে। যার মধ্যে সুন্দরবনবিনাশী রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও রয়েছে ভারতকে ট্রান্সশিপমেন্টের নামে করিডোর প্রদান। অথচ তিস্তার পানিবণ্টনের নামে মূলো ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। অন্যদিকে ভারত অভিন্ন নদীর পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহারের জন্য মরিয়া হয়ে বিভিন্ন বাঁধ-গ্রোয়েন নির্মাণ করে চলেছে। জনগণের ওপর বর্তমান সরকারের শোষণ নির্যাতন এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদসহ অন্যান্য সাম্রাজ্যাবাদের সাথে সম্পাদিত অসম জাতীয় ও গণস্বার্থবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম থেকে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরিয়ে নিতে বিভিন্ন সময়ে নন ইস্যুকে ইস্যু করা হচ্ছে। শ্রেণি শোষণকে ধামাচাপা দিতে জনগণের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কখনো কখনো ধর্মের নামে, কখনো সমতল-পাহাড়ির নামে। আবার স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি, কখনো গণজাগরণ মঞ্চ, কখনো হেফাজতে ইসলাম আবার কখনো জঙ্গিবাদ নামক বিভিন্ন বিষয়ের অবতারণা করা হচ্ছে। জনগণের শোষণ বঞ্চনার জন্য দায়ী সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা, দালালপুঁজি ও তার পাহারাদার স্বৈরাচারী সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার নিশ্চয়তা বিধান করতে সাম্রাজ্যবাদ ও তার এ দেশীয় দালালদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান রচনার লড়াইকে এগিয়ে নিতে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের পতাকাতলে সমবেত হোন। সংগ্রামে সাহসী হোন। আমাদের বিজয় অনিবার্য।

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)
কেন্দ্রীয় কমিটি
কেন্দ্রীয় কার্যালয়: ৮ বি বি এভিনিউ (৩য় তলা) গুলিস্তান, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত। তারিখ: ২৫/০১/২০১৭।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *