ফসল রক্ষার দাবিতে তাহিরপুরে কৃষক সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভ
স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি তাহিরপুর উপজেলা শাখার উদ্যোগে অকাল বন্যার হাত থেকে হাওরের বোর ফসল রক্ষার দাবিতে মঙ্গলবার বিকালে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলটি তাহিরপুর বাজার থেকে শুরু হয়ে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। যিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট কৃষক ও কৃষির স্বার্থে অকাল বন্যার হাত থেকে বোর ফসল রক্ষার জন্য পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।
মিছিল সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদানকালে
উপস্থিত ছিলেন কৃষক সংগ্রাম সমিতির তাহিরপুর উপজেলা শাখার সভাপতি ছয়ফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আকিকুর রেজা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রব, দ্বিজেন্দ্র লাল পুরকায়স্থ, শাহ আলম, নিজাম উদ্দিন, আব্দুল আলী, কুমোদ দেবনাথ, আশরাফুল আলম সহ বিভিন্ন কৃষক নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। জাতীয় আয়ের বৃহত্তর অংশ এই কৃষি থেকেই আসে। প্রতিবছর কৃষক ফসল ফলায় অথচ সেই ফসলের ন্যায্য মূল্য পায় না। উপরন্তু কৃষি উপকরণের তথা সার ও বীজের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। মধ্যস্বত্ত্ব ভোগীরা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী কৃষকের ফসলের মূল্য নির্ধারণ করে। এতে কৃষক প্রতিনিয়ত কৃষিতে লোকসান গুনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই ক্ষতিপুরনের জন্য কৃষক ঋণ গ্রহণ করে। কিন্তু কৃষক তার অসামর্থতার কারণে সে ঋণ আর পরিশোধ করতে পারেনা। দিনে দিনে দেনা বাড়ে। অত:পর দেনার দায়ে কৃষক জমি হারায়। এমনিভাবে ধনী কৃষক মাঝারি কৃষকে, মাঝারি কৃষক প্রান্তিক কৃষকে পরিণত হয়। অবশেষে ভিটে মাটি হারিয়ে বাস্তুহারায় পরিণত হয়। এই হলো বাংলাদেশের কৃষকের বাস্তব চিত্র। এ অবস্থা থেকে কৃষকের পরিত্রাণ মিলছে না।
স্মারক লিপিতে হাওর রক্ষাবাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সীমাহীন দুর্নীতি এবং বাঁধের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারদের লুটপাট বন্ধ করে অবিলম্বে হাওড় সুরক্ষার জন্য বেরিবাঁেধর কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানানো হয়। অকাল বন্যার হাত থেকে বোরো ফসল রক্ষার জন্য স্থায়ী সমাধান হিসেবে যাদুকাটা, বৌলাই, মাহারামসহ সকল নদী খনন করা। গত বছর ফসল হানির কারণে সমগ্র তাহিরপুর ব্যাপি খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য দরিদ্র জনগোষ্ঠির মাঝে রিলিফ এবং সমগ্র কৃষক জনগনের জন্য রেশন ও ও.এম.এস. ব্যবস্থা অবিলম্বে চালু করতে হবে। তাহিরপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থায়ী অফিস স্থাপন করতে হবে। যাদুকাটা নদীর তীর কেটে বালু উত্তোলন করা, পরিবেশ বিনষ্টকারী বোমা মেশিন ও ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে নদীর নাব্যতা নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।