১১ অক্টোবর ২০১৭ বুধবার বিকাল ৪াটয় শহীদ কমরেড ওয়াজেদ আলী ও কামরুজ্জামান মনা’র ৪৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা কমিটির উদ্যোগে বাজারের হাট চাঁদনীর পূর্ব পার্শ্বে কালীগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনে এক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত

Comred Wazed Ali-2017

তারিখ ঃ ১১/১০/১৭   প্রেস বিজ্ঞপ্তি
শহীদ কমরেড ওয়াজেদ আলী ও কামরুজ্জামান মনা’র ৪৩ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সকল সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান হয়।
আজ ১১ অক্টোবর ২০১৭ বুধবার বিকাল ৪াটয় শহীদ কমরেড ওয়াজেদ আলী ও কামরুজ্জামান মনা’র ৪৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা কমিটির উদ্যোগে বাজারের হাট চাঁদনীর পূর্ব পার্শ্বে কালীগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনে এক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের উপজেলা আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি তোজাম্মেল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বি.এম. শামীমুল হক, কৃষক সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান, যুগ্ম-সম্পাদক কামরুল হক লিকু, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদের যশোর জেলা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তৌহিদুর রহমান বাদল, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা সভাপতি সালাম শাহ, কৃষক সংগ্রাম সমিতির ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি ডাঃ ওলিয়ার রহমান, কালীগঞ্জ থানার নেতা আতিয়ার রহমান প্রমুখ। সভাটি পরিচালনা করেন প্রয়াতের সহোদর ও কৃষক সংগ্রাম সমিতি ঝিনাইদহ জেলা আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন। সভায় নেতৃবৃন্দ প্রয়াতের সংগ্রাম জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে এ দেশে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ আমলা-মুৎসুদ্দি পুঁজিবাদ বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবকে অগ্রসর করতে সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, সাম্রাজ্যবাদের আন্তঃদ্বন্দ্বের শিকার হয়ে প্রায় আট লক্ষাধিক নির্যাতিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের উদ্বাস্তু শরণার্থীদের নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে দেশ। এমনিতেই চলতি বছরে দেশে মার্চের দেশে আগাম বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ী ঢল ও অকাল বন্যা, এরপর ফসলে ছত্রাক আক্রমণে, দেশের প্রায় ৪০টির অধি জেলায় বন্যা ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জলাবদ্ধতায় কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, গোবাদি পশু খাদ্য ঘাটতিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এর ওপর চলতি মৌসুমে ব্যাপক পাটের চাষ হলেও কৃষক পাটের মূল্য না পেয়ে দিশেহারা। শিল্প ক্ষেত্রে সারাদেশের ন্যায় খুলনা বিভাগে সরকারি পাটকলগুলি একের পর এক বন্ধ, শ্রমিক সপ্তাহের পর সপ্তাহ মজুরি না পেয়ে দূর্বিসহ জীবন-যাপন করছে, মিলের উৎপাদন হ্রাস করছে, অন্যদিকে বেসরকারি পাটকল মালিকেরা একটা থেকে দুইটি এভাবে পাটকল বৃদ্ধি করে চলেছে। দেশের ব্যাপক প্রবৃদ্ধির কথা বলা হলেও প্রায় সাড়ে ৪ কোটি কর্মক্ষম মানুষ বেকার। তার ওপর অলাভজনক দেখিয়ে মোবারকগঞ্জসহ সকল চিনিকলগুলোকে বন্ধ করার পাঁয়তারা চলছে। নৌ-যান, হোটেলসহ বিভিন্ন শিল্পে শ্রম আইন ও গেজেট বাস্তবায়নের সরকার প্রশসানের কোন পদক্ষেপ নাই। শ্রমিকের ন্যূনতম বেঁচে থাকার মত মজুরির নিশ্চয়তা এখনো হয়নি। সারাদেশের ন্যায় চাঁদাবজি, টেন্ডারবাজি, নারী ও শিশু ধর্ষন, নির্যাতন, হত্যা, গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেই চলেছে। চাল, পেঁয়াজ, লবন, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। বিদ্যুৎ, গ্যাসের মূল্যসহ বাড়ি, গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। সারাদেশের ন্যায় রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে খানা-খন্দর হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ভারত কর্তৃক উজানের অভিন্ন নদ-নদীতে বাঁধ দেওয়া প্রভাব পদ্মা অববাহিকার নদ-নদীতে তীব্র। এ অঞ্চলের জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণও উজানের পানি না পেয়ে নদ-নদীর নাব্য বিনষ্ট হওয়া ও সমুদ্র থেকে লবণপানিসহ পলি দ্বারা নদ-নদী ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশনের তীব্র সমস্যা সৃষ্টি যা এ অঞ্চলে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে যার অন্যতম ভবদহ জলাবদ্ধতা। এর ওপর রয়েছে সুন্দরবন বিনাশকারী বাগেরহাটের রামপালে কয়লা ও পাবনা রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মত জাতীয় ও জনস্বার্থ তথা পরিবেশ-প্রতিবেশ বিনাশী অপতৎপরতা। এখানে উল্লেখ্য, বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আমাদের দেশসহ গোটা বিশ্বে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, জাতীয় ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্বায়ত্বশাসন প্রশ্নে সংবিধানিক অধিকার রক্ষায় আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের সাথে বিরোধী প্রকাশ্য রূপ পেয়েছে যা প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতির নানা বক্তব্যে প্রকাশ পায়। গত ৩ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার হাইকোর্টের রায় ঐক্যমতের ভিত্তিতে বহাল রেখে সরকারপক্ষের আপিল খারিজ করেন আপিল বিভাগ। পর্যবেক্ষণে “সবকিছুর ব্যক্তিকরণের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে একটি ‘ভুয়া ও মেকি গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা”, “সংসদ একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত”, “ রাজনীতি এখন বাণিজ্যে পরিণত”, “ সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সাংসদেরা দলের হাইকমান্ডের কাছে জিম্মি”, “ক্ষমতার অপব্যবহার ও দাম্ভিকতা দেখানোর ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার মতো কোনো প্রতিষ্ঠান (ওয়াচডগ) নেই”, “ রাষ্ট্রক্ষমতা সাম্প্রতিক সময়ে গুটিকয়েক মানুষের একচ্ছত্র বিষয়ে পরিণত”- এ রকম নানা বিষয়ে অবতারণা দ্বারা নয়াউপনিবেশিক আধাসামন্তবাদী বালাদেশ রাষ্ট্রের জন্যে এসডিজি’র কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করা বা নতুন সংবিধান সভার প্রশ্নটিকে সামনে আনা হয়েছে। এমতাবস্থায় রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ, তার পর্যাপ্ত ত্রাণ ও নিরাপদে প্রত্যার্বনের ব্যবস্থার দাবিকে সামনে রেখে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার অসারতা ঢাকার সকল অপকৌশলকে মোকাবেলা করতে ব্যাপক শ্রমিক-কৃষক-জনগণের রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কেন্দ্র ঘোষিত ১৩ দফার ভিত্তির আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলার বিকল্প নাই।

বার্তা প্রেরক
সাখাওয়াত হোসেন
মোবাঃ ০১৭-৩৪৬১-৬০৯০।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *