সংবাদ বিজ্ঞপ্তি তারিখঃ ২৩ অক্টোবর, ২০১৭
আবু হেনা চৌধুরীর১১তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায়
পালনের লক্ষ্যে এনডিএফ-এর বিভিন্ন কর্মসূচী
সাম্রাজ্যবাদ সামন্তবাদ আমলা দালালপুঁজি বিরোধী আপোষহীন নেতা, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট( NDF)সিলেট জেলা শাখার সাবেক সভাপতি সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আবু হেনা চৌধুরীর ১১ তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল ২৪ অক্টোবর। আবু হেনা চৌধুরীর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে কাল ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৮.০০ টায় শাহজালাল (র;) দরগাস্থ কবরস্থানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং সন্ধ্যা৭.০০ টায় বন্দর বাজারস্থ সিলেট জেলা কার্যালয়ে স্মরণসভা।
উল্লেখ্য, আবু হেনা চৌধুরী ১৯৪২ সালের ১১ নভেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন এবং ২০০৬ সালের ২৪ অক্টোবর শ্বাসনালী ও খাদ্যনালীর সংক্রমনজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর পিতার নাম যওয়াদুর রহমান এবং মাতার নাম শামসুন্নেছা। ছাত্রজীবন থেকেই আবু হেনা চৌধুরী বাম ধারার প্রগতিশীল রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন এবং ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলা শাখার কর্মী হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সূত্রপাত ঘটে। তিনি মার্কসবাদের কালজয়ী আদর্শকে তাঁর জীবনের পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করেন। ৬০’এর দশকে স্বৈরাচার আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থে সেন্টো-সিয়াটো জোটে পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্তির বিরুদ্ধে সেন্টো-সিয়াটো জোট বিরোধী আন্দোলন, ষাটের দশকের শেষ দিকে মসজিদ আল-আকসাতে ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার আন্দোলনসহ সাম্রাজ্যবাদ ও স্বৈরাচার বিরোধী অসংখ্য আন্দোলনে আবু হেনা চৌধুরী অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং কারাবরণ করেন। সে সময় হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন তাদের প্রণীত শিক্ষানীতি সম্পর্কে ছাত্র-শিক্ষকের সঙ্গে মতবিনিময়ের আয়োজন করলে এমসি কলেজের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আবু হেনা চৌধুরী উক্ত শিক্ষা কমিশনের বিভিন্ন গণবিরোধী দিক তুলে ধরে সুস্পষ্ট বক্তব্য প্রদান করেন। সেজন্য তৎকালীন এমসি কলেজের অধ্যক্ষ সুলেমান চৌধুরী আবু হেনা চৌধুরীকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করেন। এই বহিষ্কাদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে রিট দায়ের করলে মহামান্য হাইকোর্ট আবু হেনা চৌধুরীর পক্ষে রায় প্রদান করেন। সিলেট সফর কালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের সম্মুখে সিলেটে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের যুক্তি ও দাবী অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে ইংরেজি ভাষায় উত্থাপন করলে আবু হেনা চৌধুরী সর্ব মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন।
মহামতি স্ট্যালিনের মৃত্যুর পর ক্রুশ্চেভচক্র ক্ষমতায় এসে বিশ্ব কমিউনিস্ট আন্দোলনে তাত্ত্বিকভাবে যে বিতর্কের সৃষ্টি করে সে বিতর্কের ঢেউ এদেশেও এসে লাগে। মতাদর্শিক প্রশ্নে আমাদের দেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও পার্টি প্রভাবাধীন ন্যাপ, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন গণসংগঠন দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ে। ছাত্র ইউনিয়নের বিপ্লবী ধারা‘মেননগ্রুপ’হিসেবে সংগঠন-সংগ্রাম পরিচালনা করে। এই আদর্শগত সংগ্রামে আবু হেনা চৌধুরী অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এবং ছাত্র ইউনিয়নের বিপ্লবী ধারা‘মেননগ্রুপ’এর সাথে একাত্ম থাকেন। এ সময় তিনি ছাত্র ইউনিয়ন (‘মেননগ্রুপ’) সিলেট জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং স্বৈরাচার আইয়ুব বিরোধী ৬৯’এর গণআন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
সাম্রাজ্যবাদ সামন্তবাদ বিরোধী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্ম না হওয়ায় শোষণমুক্ত বাংলাদেশ আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এদেশের মানুষের দুঃখ-কষ্টের মূল কারণ সাম্রাজ্যবাদী লগ্নিপুঁজির নগ্ন শোষণ, সামন্তবাদী ভূমি ব্যবস্থা এবং তাদের এজেন্ট আমলা মুৎসুদ্দিপুঁজির নির্মম শোষণ-শাসন। সেজন্য এদেশের মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের এজেন্ট আমলা মুৎসুদ্দিপুঁজির শৃঙ্খল থেকে মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করা। আবু হেনা চৌধুরী আজীবন এ সংগ্রামের পথিকৃৎ ছিলেন। পূর্বের রাজনৈতিক ধারাবাহিকতায় আশির দশকে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (NDF)গঠিত হলে ১৯৮৮ সালে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখা গঠিত হয়। আবু হেনা চৌধুরী প্রথমে আহবায়ক ও পরে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।
জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার সভাপতি এডভোটে কুমার চন্দ্র রায় এবং সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ দাস চম্পু এক য্ক্তু বিবৃতিতে সংগঠনের নেতা, কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের মহান নেতার স্মরণসভায় উপস্থিত থেকে সভাকে সফল করার আহবান জানান।
বার্তাপ্রেরক
জয়দীপ দাসচম্পু
সাধারণ সম্পাদক
এনডিএফ, সিলেট জেলাশাখা।
০১৬৭৩ ৯৮৩ ২৯৬