তারিখঃ ২০/০৩/১৮ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
বিশ্বের দেশে দেশে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিশ্ব শ্রমিক শ্রেণী, নিপীড়িত জাতি ও জনগণের গণতান্ত্রিক ও বিপ্লবী সংগ্রামকে অগ্রসর করুন।
২০ মার্চ ২০১৮ মঙ্গলবার বিকাল ৪.৩০ টায় সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক ঐক্য-এর উদ্যোগে ১৬তম ইরাক আক্রমণ দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন এআইডিইউ এর সদস্য, জাতীয় বিপ্লবী ফ্রন্টের সভাপতি শ্রমিক আবুল হোসেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সহ-সম্পাদক মোঃ ইয়াসিন, ও বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সহ-সম্পাদক প্রকাশ দত্ত। সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাব ও পল্টন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। সমাবেশে বক্তাগণ বলেন- ‘সাম্রাজ্যবাদ মানেই যুদ্ধ’। ফলে দেখা দিচ্ছে বাজার ও প্রভাব বলয় পুনর্বণ্টন, জ্বালানির উৎস, রণনীতিগত রুট, ভূ-রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসমূহ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে প্রতিযোগিতা। এখন পর্যন্ত একক পরাশক্তি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার বৈশ্বিক আগ্রাসনের প্রধান হাতিয়ার ন্যাটোকে ব্যবহার করে প্রতিপক্ষের অগ্রসরমানতা বাধা দিতে সচেষ্ট। সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধের নামে দেশে দেশে আগ্রাসন ও দখলের কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিশ্বের প্রায় ১৮০টি দেশে তাদের সেনা উপস্থিতির তথ্য দিচ্ছে প্রচার মাধ্যম। অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়া ও বৃহৎ সাম্রাজ্যবাদে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে অগ্রসরমান পুঁজিবাদী চীন মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদী মিত্রদের মোকাবেলা করে স্বীয় বাজার ও প্রভাব বলয় সম্প্রসারণে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ২০০৩ সালে সাম্রাজ্যবাদী ইঙ্গ-মার্কিন কতৃক এক তরফাভাবে ইরাক আক্রমণ, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, সুমালিয়া, সুদান তার ধারাবাহিকতা। বক্তাগণ আরো বলেন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থল সংযোগ সেতু এবং প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরের সংযোগকারী মালাক্কা প্রণালী সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরীয় দেশ হিসাবে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে চলেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেমন একদিকে বৈশ্বিক মন্দা ও ধসের কথা বলা হচ্ছে তেমনি ‘দ্বিতীয় শীতলয্দ্ধু’ এবং ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে’র প্রসঙ্গ সামনে আসছে। এ অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দালাল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক কার্যক্রম ও তৎপরতায় দেখা যায়- সরকার সাম্রাজ্যবাদ ও তার বিশ্বসংস্থা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ-এর নীতি নির্দেশ কার্যকরী করে চলেছে। দারিদ্র্য দূরীকরণের নামে এমডিজি (MDG) এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এসডিজি (SDG) পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সামনে আনছে। ফলে সাম্রাজ্যবাদী ঋণের জালে আবদ্ধ দেশ আরও গভীর সংকটে নিপতিত হচ্ছে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সাথে নয়াউপনিবেশিক-আধাসামন্তবাদী ভারতের লেমোয় (Logistic exchange memorandum of agreement) চুক্তির প্রেক্ষাপটে মহাজোট সরকার সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থে ভারতের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তিসহ জাতীয় স্বার্থ বিরোধী চুক্তি ও সমঝোতা করে অগ্রসর হচ্ছে। সর্বোচ্চ মুনাফার লক্ষ্যে সাম্রাজ্যবাদী লগ্নিপুঁজির প্রয়োজনে সামগ্রিক অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে এশিয়ান হাইওয়ে, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে, ইন্দো-প্যাসিফিক করিডোর পরিকল্পনা, বে-অব বেঙ্গল ইন্ডাষ্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট উদ্যোগ, চীনের ‘এক বলয় এক পথ’ পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে বিসিম অর্থনৈতিক করিডোর প্রক্রিয়া, সাম্রাজ্যবাদের দালাল ভারতের বিশেষ স্বার্থ ও সুবিধা হাসিলের জন্য সড়ক ও রেলপখ, নদীপথ, সমুদ্র ও নদী বন্দর অবাধ ও সর্বাত্মক ব্যবহারে করিডোর পরিকল্পনা অগ্রসর করে চলেছে। তাই প্রয়োজন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সাম্রাজ্যবাদ এবং তাদের দালালদের উচ্ছেদ করে শ্রমিক-কৃষক জনগণের সরকার, রাষ্ট্র ও সংবিধান প্রতিষ্ঠা সংগ্রামকে বেগবান করা।
বার্তা প্রেরক
প্রকাশ দত্ত
সদস্য
এআইডিইউ
০১৯২৪০৪৮১৩৯