১৪ আগস্ট ’১৮ এ দেশের নারী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপোসহীন নেত্রী, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপিকা হামিদা রহমানের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করুন

গনতান্ত্রিক মহিলা সমিতি ৩ আগস্ট ২০১৮

এ লড়াই নারীর সমঅধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার
* সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের দালাল শাসক-শোষক গোষ্ঠীর এবং এনজিওদের নারীবাদীতার বিরুদ্ধে নারী মুক্তির লক্ষ্যে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলুন।
* সাম্রাজ্যবাদের এক দালালের পরিবর্তে আরেক দালাল নয়, এক সাম্রাজ্যবাদের পরিবর্তে আরেক সাম্রাজ্যবাদ নয়- নারী মুক্তির লক্ষ্যে সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ ও আমলা দালালপুঁজির বিরুদ্ধে জাতীয় গণতান্ত্রিক সরকার, রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলুন।
* আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।

সংগ্রামী সাথী ও বন্ধুরা,
অভিনন্দন গ্রহণ করুন। ১৪ আগস্ট ’১৮ এ দেশের নারী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপোসহীন নেত্রী, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপিকা হামিদা রহমানের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯২৫ সালের ১৯ জুলাই যশোর শহরে পুরাতন কসবায় তাঁর জন্ম। তিনি ১৯৪২ সালে মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৪ সালে বিএ পাশ করে ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। স্কুলে পড়া অবস্থায় বৃটিশ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলন ও কমিউনিষ্ট আন্দোলনের প্রভাবে তিনি রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত হন। সংসার জীবনে স্বচ্ছলতা থাকলেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে আত্মপ্রতিষ্ঠার পক্ষে ছিলেন না। কোলকাতায় পড়াকালীন তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন। বিশ্বযুদ্ধ শেষ ও দেশ বিভাগের সময়কালে তিনি প্রত্যক্ষভাবে কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত থাকেন। ১৯৪৮ সালে তাঁর নামে হুলিয়া জারি হলে তিনি আত্মগোপনে থেকে রাজনৈতিক কর্মকান্ড অগ্রসর করেন। সে সময় বঙ্গদেশে তে-ভাগা, টংক, নানকার ইত্যাদি কৃষক আন্দোলন আলোড়ন সৃষ্টি করে। যশোরে কলেজে পড়াকালে হামিদা রহমান তে-ভাগা আন্দোলন ও কমরেড আবদুল হকের প্রভাবে কৃষকদের পাশে দাঁড়ান। তিনি মওলানা ভাসানীর ন্যাপের সাথে যুক্ত হয়ে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে অগ্রসর করতে সক্রিয় থাকেন। ১৯৬০-এর দশকে ছাত্র আন্দোলন, গণআন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৬৯-এর ২০ জানুয়ারী আসাদ শহীদ হওয়ার ঘটনা তাঁকে বিশেষভাবে আলোড়িত করে বিপ্লবী ধারার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহয়তা করে। ১৯৬৫-৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তানে কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্র্টি (ন্যাপ), শ্রমিক ফেডারেশন, কৃষক সমিতি, ছাত্র ইউনিয়ন ইত্যাদি গণসংগঠনগুলোর মত ‘মহিলা সংসদ’ও ভেঙ্গে যায়। এই ভাঙ্গন প্রক্রিয়ায় তিনি সুবিধাবাদ সংশোধনবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছায়রা আহম্মেদ ও কামরুন নাহার (লাইলি)’র নেতৃত্বে ‘মহিলা সংসদ’-এর সহ-সভাপতি হন। তিনি জনাব সাঈদুল হাসান ও বদরুদ্দিন উমরের সম্পাদনায় ১৯৭০ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘গণশক্তি’র রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন। পাকিস্তান আমলের ধারাবাহিকতায় নয়াউপনিবেশিক-আধাসামন্তবাদী বাংলাদেশে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী প্রগতিশীল ধারার নারী সংগঠন-সংগ্রামে সক্রিয় ও নেতৃত্বকারী ভূমিকা গ্রহণ করেন। ১৯৯৪ সালের ৮ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বাংলাদেশে প্রগতিশীল ধারার নারী আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি গঠনের ক্ষেত্রে হামিদা রহমান নেতৃত্ব প্রদান করেন। তিনি গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী হিসেবে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি হন এবং এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে অগ্রসর করেন।

উৎপাদনের সকল ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এ দেশের জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবও নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া অসম্ভব। বাংলাদেশে গার্মেন্টস্, নির্মাণ, চা-বাগান, ফার্মাসিউটিক্যালস ইত্যাদি শিল্প ক্ষেত্রসহ সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা, হাসপাতাল, অফিস-আদালতে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, গৃহকর্মী, প্রবাসী নারী শ্রমিক, গ্রামের কৃষাণীদের তথা শ্রমজীবি নারীদের হাড়ভাঙ্গা খাটুনি, রক্ত ঘাম করা পরিশ্রমে মুনাফার পাহাড় গড়ে দেশের অর্থনীতি চালু রাখলেও তারা সম ও ন্যায্য মজুর পায় না। তারা দেশের আপামর জনতার উপর চেপে বসা তিন শোষকের নির্মম শোষণ-নির্যাতন ছাড়াও পুরুষের শোষণে জর্জরিত।

বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী, তাদের জীবন-জীবিকার সমস্যাও আপামর জনতার সমস্যার সাথে জড়িত। চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি; দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বৃদ্ধি; গার্মেন্টসের নারী শ্রমিকসহ শিল্পের শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরী না দেওয়া, কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা না থাকা, ভবন ধস ও অগ্নিকান্ডে হতাহত হওয়া; কাজের অভাবে অর্ধাহারে ও অনাহারে জীবন-যাপন ইত্যাদি তীব্রতর হয়ে তাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। এমনকি প্রবাসী নারী শ্রমিকরা নির্যাতিত ও প্রতারিত হয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছে। তদুপরি সামাজিক অবক্ষয় সর্বব্যাপী রূপ ধারণ করায় মাদকের ছড়াছড়ি, চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই, গুম-খুন, নারীনির্যাতন-নারীধর্ষণ, শিশু ও নারী পাচার ইত্যাদি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ভুক্তভোগী মূলতঃ নারীরাই।

দেশ আজ এক গভীর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক তথা সামগ্রিক সংকটে জর্জরিত। অথচ মহাজোট সরকার উন্নয়নের কথা বলে গলা ফাটিয়ে চলেছে। মহাজোট সরকার সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনা ‘এসডিজি’ বাস্তবায়নে ১৭টি লক্ষ্যের অন্যতম অবকাঠামো নির্মাণ করে সাম্রাজ্যবাদী পুঁজি লগ্নি করার জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতাকে উন্নয়ন বলে চালাচ্ছে। অথচ এই ঋণের বোঝা চাপানো হচ্ছে জনগণের ঘাড়ে। বর্তমানে মাথাপিছু এই ঋণ ৫০,০০০/- ছাড়িয়ে গেছে। আজ জন্ম নেওয়া শিশুও এই ঋণ নিয়ে জীবন শুরু করছে। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে জনগণের ঘাড়ে করের বোঝা চাপানো হচ্ছে, গ্রামের ভূমিহীন-গরীব কৃষককে করের আওতায় আনা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি সহ জীবনযাত্রার ব্যয় মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির ফলে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়ছে। অথচ বাজার দরের সাথে সঙ্গতি রেখে বাঁচার মত মজুরী দেওয়া হচ্ছে না। পোশাক শ্রমিকসহ বেসরকারী শিল্প-প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত মজুরীর দাবীকে উপেক্ষা করে মালিকরা নামমাত্র মজুরী বৃদ্ধি করে কার্যতঃ মজুরী কমানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আর মহাজোট সরকার মালিকদের স্বার্থে দালাল শ্রমিক নেতা ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে কাজে লাগিয়ে বিভ্রান্ত করা ও নির্বাচন কৌশলে স্বীয় লক্ষ্য হাসিলে তৎপর। মহাজোট সরকারের জাতিসংঘের ‘এসকাপ’ পরিকল্পনায় বৈদেশিক ঋণে অবকাঠামো নির্মাণ তৎপরতার অন্যতম দিক হচ্ছেÑ নয়াউপনিবেশিক ভারতের মূল ভূ-খন্ডের সাথে উত্তর-পূর্ব ভারতের সর্বাত্মক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার জন্য করিডোর কার্যকরী করে ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষ আমলের এতদ্বাঞ্চলে যোগাযোগ অবকাঠামো পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। আবার বৃহৎ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে অগ্রসরমান পুঁজিবাদী চীনের ‘বিসিম অর্থনৈতিক করিডোর’ এবং ভারতের ‘উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা’ কার্যকরী করার প্রতিযোগিতায় মহাজোট সরকার উভয় পক্ষের স্বার্থ রক্ষায় ভূমিকা নিচ্ছে।

দেশ-জাতি-জনগণের এই কঠিন সময়ে প্রতিক্রিয়াশীল বিরোধী দল বিএনপি’র নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট জনগণ ও জাতীয় জীবনের জরুরী সমস্যা নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করছে না। সম্প্রতি নির্বাচনকে সামনে রেখে সুবিধাবাদী-সংশোধনবাদী, এনজিও মার্কা কয়েকটি বাম নামধারী দল মিলে “বাম গণতান্ত্রিক জোট” গঠন করেছে। তারা মূলতঃ চীনের পরিকল্পনা ও স্বার্থ বাস্তবায়নে তৎপর।

সংগ্রামী বন্ধুগণ,
ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার নির্মম শোষণ অব্যাহত রেখে দুর্নীতি করে বেপরোয়া লুটপাট চালিয়ে দালালপুঁজি স্ফীত করার অপতৎপরতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ‘বাংলাদেশ বাংক’ থেকে শত শত কোটি ডলার লুট হওয়া, ভল্টে থাকা সোনা পাল্টে যাওয়া; ব্যাংকে খেলাপী ঋণ বৃদ্ধি পাওয়া, ব্যাংক দেউলিয়া হওয়াসহ ব্যাংকিং সেক্টরে দুর্নীতি সর্বাত্মক রূপ নিয়েছে। দেশে শিক্ষিত-উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারী চাকুরীতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবীতে ছাত্র আন্দোলন; পরিবহন সেক্টরে অনিয়ম এমন রূপ ধারণ করেছে যে, সম্প্রতি চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে হানিফ পরিবহনের আহত যাত্রীকে পানিতে ফেলে হত্যা করাসহ প্রতিনিয়ত সড়ক দূর্ঘটনার ধারাবাহিকতায় রাজধানীতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ছাত্র হত্যাকান্ডের ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্র আন্দোলন দমনে পুলিশী অভিযান এবং মিথ্যা আশ্বাস কৌশলে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকছে। তদুপরি আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য প্রভুর আশীর্বাদ নিয়ে ভারতের সমর্থন এবং সৌদি আরবের নেতৃত্বে ৩৪টি সুন্নি মুসলিম দেশের জোটভুক্ত হয়ে উগ্রবাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ ভিত্তি করে ইসলাম ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িকতাকে কাজে লাগিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। একই সাথে সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়া ও পুঁজিবাদী চীনের সাথেও গাঁটছড়া বেঁধে চলেছে।

আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বে শাসক-শোষক শ্রেণীর মধ্যকার দ্বন্দ্ব-সংঘাত এই বিশৃঙ্খল ও নৈরাজ্যিক পরিস্থিতিকে আরো বৃদ্ধি ও তীব্রতর করছে। ক্ষমতার এই দ্বন্দ্ব আজ একই সাম্রাজ্যবাদের এক দালালের পরিবর্তে আরেক দালালের, হাসিনার পরিবর্তে খালেদার, মহাজোটের বদলে ২০ দলীয় জোটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং তা এক সাম্রাজ্যবাদের পরিবর্তে আরেক সাম্রাজ্যবাদের তথা মার্কিনের নেতৃত্বে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের পরিবর্তে সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়া ও পুঁজিবাদী চীনের নেতৃত্বে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (sco)’র, সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়া ও নয়াউপনিবেশিক-আধাসামন্তবাদী ভারতের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের প্রতিযোগিতা হিসেবে সামনে আসছে। বাংলাদেশে মার্কিনের প্রাধান্য ও নিয়ন্ত্রণ দূর্বল হয়ে প্রতিপক্ষের অবস্থানকে শক্তিশালী করছে। ভূ-রাজনৈতিক ও রণনীতিগত গুরুত্বের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব চলমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে সংঘাত ও যুদ্ধের বিপদ বৃদ্ধি করছে। মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা, আসামে ৪০ লক্ষ বাঙ্গালীর ভারতীয় নাগরিকত্ব সমস্যা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করছে।

বাংলাদেশের নারী সমাজ তথা শ্রমিক-কৃষক-জনতার দুঃখ-কষ্ট, সমস্যা-সংকট, শোষণ-লুন্ঠণ, নিপীড়ন-নির্যাতনের কারণ হচ্ছে প্রচলিত নয়াউপনিবেশিক-আধাসামন্তবাদী আর্থসামাজিক ব্যবস্থা। এর জন্য দায়ী সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা-মুৎসুদ্দিপুঁজিকে উচ্ছেদ পূর্বক জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব সফল করে মুক্ত সমাজ গড়ার মাধ্যমে নারী মুক্তি অর্জিত হতে পারে। অথচ এই সত্যকে আড়াল ও অস্বীকার করে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল শাসক-শোষক গোষ্ঠী এবং এনজিও’রা নারী ও পুরুষের মধ্যকার বিভক্তি বৃদ্ধি করে জনগণের ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। উগ্রবাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার ফাঁদে ফেলে জনগণকে বিভক্ত ও বিভ্রান্ত করছে। এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের নারী সমাজের দায়িত্ব নারী মুক্তির লক্ষ্যে এই তিন শত্রুকে উৎখাত করে জাতীয় গণতান্ত্রিক সরকার, রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সাথে নারী-পুরুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রাম অগ্রসর করে বিজয় ছিনিয়ে আনা। অধ্যাপিকা হামিদা রহমানের এই মতাদর্শ ও রাজনৈতিক সংগ্রামকে অগ্রসর করার জন্য সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হোন।

সংগ্রামী অভিনন্দনসহ
কেন্দ্রীয় কমিটি
গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *