গতানুগতিক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের কোন লাভ নেই। সাম্রাজ্যবাদ ও তার এদেশীয় দালাল বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামের পরিণতিতে জনগণের স্বার্থরক্ষাকারী সংবিধান, সরকার ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই সুষ্ঠু নির্বাচনের গ্যারান্টি।
আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিহত করুন। বিশ্বযুদ্ধের বিপদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।
ভারতের মূল ভূ-খণ্ডের সাথে উত্তর-পূর্ব ভারতের সরাসরি সকল রূপের যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সাম্রাজ্যবাদের দালাল ভারতকে সড়ক, রেল, নৌ, বিদ্যুৎ ইত্যাদি করিডোর প্রদান চুক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।
উন্নয়নের নামে সাম্রাজ্যবাদী এসডিজি (SDG) পরিকল্পনা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় দেশ, জাতি ও জনগণকে ঋণগ্রস্থ করে দেশকে দেউলিয়া করার ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলুন।
সংগ্রামী সাথী ও বন্ধুগণ
সংগ্রামী অভিনন্দন গ্রহণ করুন। দেশ আজ তীব্র অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক তথা সামগ্রিক সংকটে নিমজ্জিত। এই সময়ে শুরু হয়েছে নির্বাচনী ডামাডোল। সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে ‘মহাজোট’ ক্ষমতাসীন থাকা বা বিএনপি’র নেতৃত্বে ‘ঐক্য ফ্রন্ট’ ক্ষমতাসীন হওয়া- এতে জনগণের কোন লাভ হবে না। শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতার সমস্যা-সংকট যে গভীরে রয়েছে তা আরো গভীরতর হবে। চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির দাম, গাড়ী ভাড়া, বাড়ী ভাড়া ইত্যাদি প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। শ্রমিক বাঁচার মত মজুরি পাচ্ছে না, সরকার শ্রমস্বার্থ বিরোধী আইন প্রণয়ন ও কার্যকরি করে শ্রমিকের অধিকার হরণ করে চলেছে। কৃষক জমি চাষ করে উৎপাদন খরচ তুলতে পারছে না। ভূমিহীন-দরিদ্র কৃষকের সংখ্যা দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাষের জমি প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে। শিক্ষাকে আজ বাণিজ্যিকিকরণ করা হয়েছে। শিক্ষাশেষে চাকরির অনিশ্চয়তাসহ বেকারত্ব আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারী ধর্ষণ ও নির্যাতন, নারী ও শিশু পাচার আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্রমিক-কৃষক-জনগণের গণতান্ত্রিক এবং বিপ্লবী আন্দোলন-সংগ্রাম দমনে সকল রূপের কালাকানুন অব্যাহত রেখে ও বৃদ্ধি করে প্রগতিশীল বামপন্থী নেতা-কর্মীদের অপহরণ, গুম, খুন, হত্যা করার ধারাবাহিকতায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও মাদক বিরোধী অভিযান ইত্যাদির আড়ালে ক্রসফায়ার, এনকাউন্টার, বন্দুকযুদ্ধ ইত্যাদি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত থাকবে ও বাড়বে। ইতোমধ্যে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ পাশ করে গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করেছে। ক্ষমতায় যারাই আসবে তারাই এসডিজি বাস্তবায়নের ‘উন্নয়ন তৎপরতা’র গলাবাজির সাথে সাথে উল্লেখিত বিদ্যমান শোষণ-লুন্ঠন, নিপীড়ন-নির্যাতন এবং স্বৈরতন্ত্রকে তীব্রতর করবে। এর থেকে মুক্তির জন্য নির্বাচনের পথে নয় বরং জনজীবন ও জাতীয় জীবনের জরুরী সমস্যা নিয়ে চলমান আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। সম্প্রতি ছাত্রদের কোটা সংস্কার, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে ব্যাপক ছাত্রদের অংশগ্রহণ তাৎপর্যপূর্ণ। আজ দরকার সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সকল শক্তির ঐক্য। গড়ে তুলতে হবে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল স্বৈরাচারী সরকার বিরোধী বৃহত্তর আন্দোলন-সংগ্রাম।
এ সময়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দালাল ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার স্বৈরতন্ত্রকে তীব্রতর করে প্রভুর আশীর্বাদ নিয়ে পুনরায় ক্ষমতায় থাকার জন্য মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তাছাড়া সাম্রাজ্যবাদের দালাল প্রতিক্রিয়াশীল বিরোধী দলসমূহ এবং বাম নামধারী সুবিধাবাদী-সংশোধনবাদীরা এ নির্বাচনে তাদের স্বার্থ হাসিলে বিভিন্নমুখী তৎপরতা চালাচ্ছে। এর ফলে জাতীয় রাজনৈতিক অঙ্গন ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে কি পরিস্থিতি দাঁড়াবে, কে ক্ষমতায় আসবে- তা নিয়ে জনগণের মধ্যে উৎকন্ঠা ও আতঙ্ক বেড়ে চলেছে।
বাংলাদেশ একটি নয়া-উপনিবেশিক আধা-সামন্তবাদী দেশ। এখানে ক্রিয়াশীল রয়েছে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা। এদেশে কখনো গণতন্ত্র ছিল না এবং এখনো নেই। তাই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে সরকার গঠন হয় না। এদেশে নির্বাচন ও সরকার গঠন হয় কার্যত প্রভু সাম্রাজ্যবাদের পরিকল্পনায়। তাই প্রতিক্রিয়াশীল সকল দলই ক্ষমতায় থাকা ও আসার জন্য প্রভুর আশীর্বাদের মুখাপেক্ষী থাকে। এজন্য মহাজোট সরকার মার্কিনসহ সাম্রাজ্যবাদীদের সাথে জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি সম্পাদন ও তা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো নয়া-উপনিবেশিক আধা-সামন্তবাদী দেশগুলোতে সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনায় সরকার গঠনে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের কোন লাভ হয় না। পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোতেও নির্বাচন যে প্রহসন তা; এ সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যথাক্রমে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসা ও ভ্লাদিমির পুতিনের বারবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া, চীনের সংবিধানে শি জিনপিং-এর ক্ষমতা পাকাপোক্ত করা ইত্যাদির মধ্যদিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে উন্মোচিত। পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী দেশে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হওয়া নির্ধারণ করে সে দেশের একচেটিয়া পুঁজিপতি শ্রেণি, জনগণ নয়। তাই সমগ্র বিশ্বে শ্রমিকশ্রেণি ও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও মুক্তির জন্য সমাজে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করতে হবে। আমাদের মতো নয়া-উপনিবেশিক দেশগুলোতে জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব এবং পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোতে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব তথা বিশ্ব বিপ্লব সম্পন্ন করে নতুন সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই।
সংগ্রামী সাথীরা,
আজ বিশ্ব বাজার পুনর্বণ্টন ও প্রভাববলয় বৃদ্ধি নিয়ে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব সুতীব্র। একক পরাশক্তি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার অর্থনৈতিক ও সামগ্রিক সংকটে বৈশ্বিক নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব ক্রমাগত দুর্বল হওয়ার প্রেক্ষাপটে দ্রুত বৃহৎ সাম্রাজ্যবাদী দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষে অগ্রসরমান শক্তি পুঁজিবাদী চীনের সাথে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করে সমগ্র বিশ্বে বাণিজ্যযুদ্ধ ছড়িয়ে দিয়েছে। সেই সাথে মুদ্রাযুদ্ধও প্রত্যক্ষ করছে বিশ্ববাসী। একই সাথে আগ্রাসী যুদ্ধ ছড়িয়ে দিয়ে বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি প্রক্রিয়ায় মুখোমুখি করছে বিশ্ববাসীকে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার ‘ইন্দো-প্যাসিফিক রণনীতি’ তুলে ধরে রাশিয়া ও চীনকে শত্রু চিহ্নিত করে প্রত্যক্ষ তৎপরতায় নেমেছে। এই যুদ্ধনীতিতে যুক্ত চতুষ্টয়ের অন্যতম শরিক এতদ্বাঞ্চলের প্রধান আঞ্চলিক শক্তি নয়া-উপনিবেশিক ভারতও রয়েছে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থল সংযোগ সেতু এবং প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরের সংযোগকারী মালাক্কা প্রণালী সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সকল শক্তির কাছে গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ চীনের পাল্টা ভারসাম্য হিসেবে ভারতকে কাজে লাগাতে চায়। আবার রাশিয়া-চীন ‘সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা’ (SCO), ‘আঞ্চলিক সন্ত্রাস বিরোধী কাঠামো’ (RATS), রিক-ব্রিকস ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় স্বীয় কৌশলে ভারতকে পক্ষে টানছে। ভারত তার অখন্ডতা ও সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ পরিকল্পনার স্বার্থে মূল ভূখণ্ডের সাথে উত্তর-পূর্ব ভারতের সরাসরি যোগাযোগ-সংযোগের জন্য বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ রূপে পেতে চায়। এ প্রেক্ষিতে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা, বিমসটেক ইত্যাদি সামনে আনা হচ্ছে। চীন ‘বিসিম অর্থনৈতিক করিডর’কে সামনে আনছে। তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বে উল্লিখিত সকল শক্তির প্রত্যক্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ক্রিয়াশীল।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার পুনরায় ক্ষমতাসীন হওয়ার জন্য প্রভুর আশীর্বাদ নিয়ে পাশ্ববর্তী ভারতের সমর্থনের সাথে সাথে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম ভোট পক্ষে টানার জন্য সৌদি আরবের নেতৃত্বে সুন্নি প্রধান ৩৪টি মুসলিম দেশের সাথে জোটভূক্ত হয়েছে। বর্তমানে শেখ হাসিনার মহাজোট সরকার উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদকে ভিত্তি করে এবং ইসলাম ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার কৌশলে অগ্রসর হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে উপকূলসহ মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরসমূহ, গুরুত্বপূর্ণ নদীবন্দর এবং সড়ক, রেল, নৌ, বিদ্যুৎ ইত্যাদি সকল রূপের করিডোর প্রদানের চুক্তি করে ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পূর্বাবস্থা তথা ব্রিটিশ ভারতের অভিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা বর্তমান সময়ের উপযোগী করে করিডর পরিকল্পনা কার্যকর করে চলেছে। শেখ হাসিনা সর্বশেষ ভারত সফর শেষে জাতীয় স্বার্থবিরোধী এই জঘন্য অপরাধ করে দম্ভভরে নির্লজ্জের মতো বলেছেন, ভারতকে যা দিয়েছি তা তাদের মনে রাখতে হবে, এখন ভারতের দেওয়ার পালা। অথচ তিস্তা নদীসহ পানির ন্যায্য হিস্যা ভারত এখনো দেয়নি; উভয় দেশের অভিন্ন নদী সমস্যা অব্যাহত আছে। মহাজোট সরকার উন্নয়নের কৃতিত্ব দাবী করে যে তৎপরতা চালাচ্ছে; তা কার্যত সাম্রাজ্যবাদীদের এমডিজি’র ধারাবাহিকতায় এসডিজি বাস্তবায়ন তৎপরতা ছাড়া আর কিছুই নয়। দেশে একচেটিয়া পুঁজির লগ্নি অবাধ ও সর্বাত্মক করা হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে চীন তার বিসিম অর্থনৈতিক করিডোর বাস্তবায়নে মাঠে রয়েছে এবং পুঁজির নিরাপত্তায় সামরিকভাবে উপস্থিতি বাড়াচ্ছে। এতে ভারত উদ্বিগ্ন। ভারতও প্রতিবছর বঙ্গোপসাগরে ‘সম্প্রীতি’ নামে যৌথ সামরিক মহড়া করে চলেছে। সাম্রাজ্যবাদী জাপানও পুঁজি বিনিয়োগ প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আসছে। দেশকে সাম্রাজ্যবাদীদের শোষণ-লুন্ঠনের বৃহত্তর মৃগয়া ক্ষেত্রে পরিণত করা হচ্ছে। ঋণের বোঝা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে মাথাপিছু ঋণ ৬০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। বৈদেশিক ঋণ সুদে-আসলে পরিশোধে করের বোঝা বৃদ্ধি ও ব্যাপক করে জনগণের ঘাড়ে চাপানোর জন্য আসছে ‘কর আইন’। ইতোমধ্যে কালাকানুন বৃদ্ধি করে জনগণের আন্দোলন-সংগ্রামের পথ রুদ্ধ করেছে, প্রচার মাধ্যমের কন্ঠরোধ করার জন্য ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ ও ‘সম্প্রচার আইন’ পাশ করেছে।
প্রতিক্রিয়াশীল প্রধান বিরোধী দল সাম্রাজ্যবাদের দালাল বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট প্রভুর আশীর্বাদ নিয়ে উগ্র ইসলাম ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িকতাকে ভিত্তি করে এমনকি উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদ ব্যবহার কৌশলে ৭-দফা দাবী ও ১১টি লক্ষ্য তুলে ধরে নির্বাচনে মাঠ গরম করতে সচেষ্ট রয়েছে। এরা জনগণ ও জাতীয় জীবনের জরুরী সমস্যা নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করছে না। সরকার সামগ্রিক করিডোর কার্যকরী করলেও ভারতের বিরুদ্ধে টু’ শব্দটি পর্যন্ত করছে না। ড. কামাল হোসেন এর মত মার্কিনের বিশ্বস্ত দালালরা ভারত-মার্কিন অক্ষের প্রেক্ষিতে মার্কিনের প্রাধান্য শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’, বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের সাথে ঐক্য প্রক্রিয়ায় ‘জাতীয় ঐক্যফ্রণ্ট’ গঠন করে তৎপরতা চালাচ্ছে। মার্কিনের অপর বিশ্বস্ত দালাল ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী ‘যুক্তফ্রন্ট’ এর ব্যানারে ক্ষমতার ভাগ পেতে চায়। এর ধারাবাহিকতায় মার্কিন পরিকল্পনায় জোয়ার সৃষ্টি করার পাশাপাশি দরকষাকষি করে স্ব স্ব স্বার্থ হাসিলে তৎপর রয়েছে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে সংশোধনবাদী সিপিবি, ট্রটস্কিবাদী বাসদ এবং এনজিও মার্কা বাম নামধারী কয়েকটি নামসর্বস্ব দল ও গ্রুপ গড়ে তুলেছে ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট’। এরা মূলত চীনপন্থী। এরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির ঐক্য এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ঐক্যের বক্তব্য তুলে ধরে নির্বাচনী জোট হিসেবে যে তৎপরতা চালাচ্ছে তা মূলত সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের আড়াল করে- যা সরকারের কৌশলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। দরকষাকষির মাধ্যমে তারা কিছু আসন পেতে চায়। এদের এই তৎপরতা সরকার ও প্রতিক্রিয়াশীলদের লেজুড়বৃত্তি করা, বিপ্লবী ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তি এবং শ্রমিক-কৃষক-জনগণকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া আর কিছু নয়। সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী শক্তির দাবীদারদের মধ্যে কেউ কেউ সাম্রাজ্যবাদের দালাল নয়া-উপনিবেশিক আধা-সামন্তবাদী ভারতকে ‘সাম্রাজ্যবাদ’ বা ‘আধিপত্যবাদী’ শক্তি বলে সাম্রাজ্যবাদকে আড়াল এবং বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী সরকারকে ‘ফ্যাসিবাদী’ চিহ্নিত করে কার্যত এদেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামো মূল্যায়নে রণনীতিগত বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে চলেছে। ফলে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের বৃহত্তর ঐক্য এবং আন্দোলন-সংগ্রাম ক্ষতিগ্রস্থ করছে ।
সংগ্রামী বন্ধুগণ,
নির্বাচনী এই ডামাডোলে প্রতিবিপ্লবী জোয়ার সৃষ্টি করে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের ক্ষমতাসীন থাকা বা হওয়ার এই খেলায় জনগণের কোন লাভ হবে না। এর জন্য দরকার সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সকল শক্তির ঐক্য গড়ে তুলে সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ ও তার দালাল স্বৈরাচারী সরকার বিরোধী বৃহত্তর আন্দোলন-সংগ্রাম। এই আন্দোলনের ধারাতে জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব সফল করার মাধ্যমে এদেশ থেকে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা দালালপুঁজিকে উচ্ছেদ করে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের সংবিধান, সরকার ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অগ্রসর হওয়ার বিকল্প নেই। এ পথেই সম্ভব সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং শ্রমিক-কৃষক-জনগণের কাঙ্খিত মুক্তি ।
সংগ্রামী অভিনন্দনসহ
জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (NDF)
কেন্দ্রীয় কমিটি
কেন্দ্রীয় কার্যালয়: ৮ বিবি এভিনিউ (৩য় তলা), গুলিস্তান, ঢাকা-১০০০ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত। তারিখ: ০৯নভেম্বর ২০১৮