আটলান্টিক সনদ (Atlantic Charter)

আটলান্টিক সনদ (Atlantic Charter)

অগাস্ট ১৪, ১৯৪১

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাজ্যকে প্রতিনিধিত্বকারী প্রধানমন্ত্রী  জনাব উইন্সটন চার্চিল সম্মিলিতভাবে তাদের নিজ নিজ দেশের জাতীয় শাসনের নীতিমালাতে কিছু নির্দিষ্ট সর্বজনীন নীতিমালার ঘোষণা দেওয়া যথার্থ বলে বিবেচনা করছেন, যে নীতিমালাগুলোর উপরে বিশ্বের আরও উন্নত ভবিষ্যতের জন্য তাদের প্রত্যাশা নির্ভর করে।

প্রথমত, তাদের রাষ্ট্র ভূখন্ড বা অন্যান্য কোনো বিষয়ে কোনো প্রকার সম্প্রসারণ নীতি গ্রহণ করবেন না;

দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট জনগণের স্বাধীনভাবে প্রকাশিত ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপুর্ণ নয় এমন কোনও ভূখন্ডগত পরিবর্তনে তারা আকাঙ্খী হবে না;

তৃতীয়ত, জনগণ যে ধরনের সরকার ব্যবস্থার অধীনে বাস করবে সেটি নির্বাচন করার ক্ষেত্রে তাদের (জনগণের) অধিকারকে তারা সম্মান করেন; এবং সার্বভৌম অধিকার ও আত্ম নিয়ন্ত্রণ থেকে যাদের জোরপূর্বকভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে তারা সেগুলো পুনর্বহাল অবস্থায় দেখার ইচ্ছা পোষণ করেন;

চতুর্থত, তাদের বিদ্যমান বাধ্যবাধকতাসমূহের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে, বড় বা ছোট, বিজয়ী বা পরাজিত সকল রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বৈশ্বিক বাণিজ্য ও কাঁচামালে সমান শর্ত ভোগের বিষয়টিকে আরও অগ্রসর করতে সচেষ্ট হবে;

পঞ্চমত, তারা সকলের জন্য উন্নত শ্রম মান, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সকল জনগোষ্ঠির মধ্যে পূর্ণ সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়;

ষষ্ঠত, নাৎসি স্বৈরশাসনের চূড়ান্ত ধ্বংসের পরে এমন একটি শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তারা প্রত্যাশা করেন যা সকল জনগোষ্ঠিকে তাদের নিজস্ব সীমানার অভ্যন্তরে সুরক্ষিতভাবে বসবাস করতে সমর্থ করবে এবং সকল দেশের সকল মানুষের কোনোরূপ ভয়ভীতি ও অভাব অনটন থেকে মুক্ত থেকে তাদের জীবন অতিবাহিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করবে;

সপ্তমত, এই শান্তি সকল মানুষকে বাধাহীনভাবে আন্তর্জাতিক সীমানার সাগর ও মহাসাগর ব্যবহারে সক্ষম করবে;

অষ্টমত, তারা বিশ্বাস করেন যে, বিশ্বের সকল জনগোষ্ঠিকে বস্তুবাদী ও আধ্যাত্মিক কারণে অবশ্যই বল প্রয়োগের পথ পরিহার করতে হবে। যেহেতু আগ্রাসনের হুমকি দেয় বা হুমকির কারণ হতে পারে এমন জাতিগুলো যদি তাদের সীমান্তের বাইরে অবস্থিত স্থলপথ, জলপথ কিংবা আকাশপথে রণসজ্জা অব্যাহত রাখে, তবে ভবিষ্যতে শান্তি বজায় রাখা সম্ভব হবে না, তাই তারা বিশ্বাস করেন, সাধারণ নিরাপত্তা বিষয়ক কোনো প্রকার বিস্তৃত ও স্থায়ী ব্যবস্থার মুলতবি রাখা, অর্থাৎ এই জাতিগুলোর নিরস্ত্রীকরণ অপরিহার্য। একইভাবে তারা সম্পাদনযোগ্য এমন অন্যান্য সকল পদক্ষেপকে সহায়তা এবং উৎসাহিত করবে যা শান্তিকামী জনগণের জন্য অস্ত্রের বিপর্যয়কর বোঝাকে হালকা করবে।

ফ্র্যাঙ্কলিন ডি.রুজভেল্ট
উইন্সটন এস. চার্চিল

Source: Atlantic Charter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *