কর্মসূচি

কর্মসূচি
১। রাজনৈতিক
বাংলাদেশ থেকে সাম্রাজ্যবাদ বিশেস করে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজির শোষণ ও শাসনকে উৎখাত করে জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে সংগ্রাম করা।
২। রাষ্টীয় কাঠামো।
জনগণই সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী এবং জনগণ নিম্নোক্ত প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগ করবে।
(ক) এই রাষ্ট্রের কার্যকলাপ পরিচালনা করবে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা-মুৎসুদ্দি পুঁজি বিরোধী গণতান্ত্রিক সরকার। সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজি বিরোধী শাসনতন্ত্র প্রণীত হবে। এই শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করা হবে সংবিধান সভার (Constituent Assembly) মাধ্যমে। ১৮ বছর বয়স থেকে সকলের থাকবে ভোটের অধিকার। এই শাসনতন্ত্রে থাকবে এক কক্ষ বিশিষ্ট সরকার। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে অবাধ নির্বাচন হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে গণপরিষদ (People Assembly)। গণপরিষদ একদিকে আইন প্রণয়ন করবে এবং তা কার্যকরী করবে। গণপরিষদ সদস্যদের কার্যকলাপের জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। গণপরিষদের সদস্যদের কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের অধিকার থাকবে তাদের অপসারণ (Recall) করার। মন্ত্রিসভা গণপরিষদের নিকট দায়ী থাকবে।
(খ) জাতীয় পর্যায়ে ছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্থাসমূহ গড়ে তোলা হবে।
(গ) প্রত্যেকটি সংস্থার আওতাধীন এলাকার জন্য দেওয়ানী, ফৌজদারী ও শ্রম সংক্রান্ত ইত্যাদি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য এক বা একাধিক নির্বাচিত ও সকল প্রকার প্রশাসনিক প্রভাবমুক্ত বিচারকের সমন্বয়ে আদালত থাকবে। সকল মামলার নিষ্পত্তির জন্য সহজ, সরল ও ব্যয়শূন্য পদ্ধতিগত আইনের প্রবর্তন করা হবে। প্রশাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ আলাদা করা হবে। আমলাতন্ত্রের অভিশাপ থেকে প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে মুক্ত করা হবে।
(ঘ) সকল প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদেরকে সামরিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা হবে।
(ঙ) বিভিন্ন পর্যায়ে জনগণের সদস্য ও নির্বাচিত কর্মকর্তা, বিচারকসহ রাষ্ট্রর সকল কর্মচারীর বেতন শ্রমিকের বেতনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত হবে।
(চ) সর্বস্তরের নির্বাচিত সদস্য, কর্মকর্তা ও বিচারক নির্বাচকমন্ডলী কর্তৃক যে কোন সময়ে অপসারণযোগ্য হবে।
(ছ) সর্বতোভাবে প্রশাসনিক ব্যয় হ্রাস করতে হবে এবং প্রশাসনকে গণমুখী করা হবে।
৩। মৌলিক অধিকার।
(ক) অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে গণ্য হবে এবং এসব অধিকার ভোগের সকল প্রকার সুযোগের নিশ্চয়তা বিধান হবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে।
(খ) বাক, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ প্রত্যেক নাগরিকের মত প্রকাশের, বিভিন্ন ধরনের সংগঠনে সংগঠিত হওয়ার, সমাবেশের স্বাধীনতা, নির্বাচনে নানাভাবে অংশ নেওয়ার, রাষ্ট্রীয় তথ্য জানার, রাষ্ট্রীয় কাজে অংশ নেওয়ার অধিকার থাকবে এবং কোনভাবে তা খর্ব করা যাবে না।
(গ) প্রত্যেক নাগরিকের গতিবিধির অবাধ স্বাধীনতা এবং বিচারকের পরওয়ানা ব্যতীত গ্রেফতার করা কিংবা বিনা বিচারে আটক রাখার মাধ্যমে অথবা অন্য কোন বেআইনীভাব এ অধিকার খর্ব করা চলবে না।
(ঘ) বিশেষ ক্ষমতা আইন, জননিরাপত্তা আইন, প্রেস এণ্ড পাবলিকেশন্স এ্যাক্ট, অভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন, চলচ্চিত্র সংসদ রেজিষ্ট্রেশন এ্যাক্ট, বিভিন্ন ধরনের সেন্সরশীপ, ধর্মঘট নিষিদ্ধকরণ আইন, রাজনৈতিক, ট্রেড ইউনিয়ন, সাংস্কৃতিক, প্রকাশনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিদ্যমান সকল প্রকার কালাকানুন পরিপূর্ণ উচ্ছেদ সাধন করা হবে।
৪। অর্থনৈতিক।
(ক) জাতীয় অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণকারী সমস্ত রকমের সাম্রাজ্যবাদী পুঁজি ও গণবিরোধী সাম্রাজ্যবাদীদের সেবাদাস, আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজিপতিদের পুঁজি বাজেয়াপ্ত করা হবে। ব্যাংক, বীমা, বিমান ও বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা, রাষ্ট্রীয় খাতে ভারী মূল শিল্প অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গড়ে তোলা, ভোগ্য পণ্য প্রস্তুতকারক হালকা শিল্পের ওপর যথাযথ দৃষ্টি রাখা, কুটীর শিল্প ও ক্ষুদ্র শিল্প বিকাশের পথে সমস্ত বাধা দূর করা অর্থাৎ শিল্পীয় অর্থনীতি গড়ে তোলা হবে। বৈদেশিক বাণিজ্য পরিচালনা করবে রাষ্ট্র। ব্যক্তি মালিকানা খাতের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় সুবিধার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(খ) গণবিরোধী সামন্তবাদী-জোতদারী মহাজনী ব্যবস্থার অবসান ঘটানো এবং ‘কৃষকের হাতে জমি’ এই নীতির ভিত্তিতে ভূমি সংস্কার করা হবে। জোতদার-মহাজনদের জমি বিনা ক্ষতিপূরণে বাজেয়াপ্ত করে ভূমিহীন গরীব কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। কৃষিযোগ্য সরকারী খাস জমিও ভূমিহীন গরীব কৃষকদের ভিতর বন্টন করা হবে। জলার ওপরে মৎস্যজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা ও ইজারাদারি প্রথা বাতিল করা হবে। সরকারী জলা, জোতদার-মহাজনদের জলা, গরীব ও নিঃস্ব মৎস্যজীবীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
(গ) ধান, পাট, ইক্ষু, তুলা ও তামাকসহ সকল ধরনের কৃষি পণ্যের খোদ উৎপাদক, ক্ষুদ্র ও মাঝারী কৃষক এবং মৎস্যজীবী, কামার, কুমার, তাঁতী ও মুচি ইত্যাদি পেশাজীবীরা যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্যের মূল্য উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে পায় তার নিশ্চয়তা বিধান করা এবং এই সব পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বন্ধ করা ও সকল প্রকার মহাজনী প্রথা বাতিল করা হবে।
(ঘ) সারা দেশে রেশনিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করা ও তার মাধ্যমে খাদ্য, বস্ত্রসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা, যাতায়াতের ব্যয় ও সকল প্রকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
(ঙ) ভূমি ও বিভিন্ন পেশা থেকে উৎখাত হওয়া এবং স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাপ্রাপ্ত কর্মক্ষম জনগণের বেকারত্ব দূর করে তাদের জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থান করা হবে।
৫। শ্রমিক শ্রমনীতি।
(ক) জাতীয় নিম্নতম মজুরি কমিশন ঘোষণা করা হবে। বিরাষ্ট্রীয়করণ ও হোল্ডিং কোম্পানী গঠন বন্ধ করা হবে। সরকারী ছত্রছায়ায় শিল্প এলাকায় শ্বেত সন্ত্রাস বন্ধ করা এবং শ্রমিক ছাঁটাই, লে-অফ, লকআউট বন্ধ করা ও বন্ধ কল-কারখানা অবিলম্বে চালু করা হবে।
(খ) কারখানা শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক এবং সকল সরকারী ও বেসরকারী গণকর্মচারীর জন্য বাঁচার মত মজুরি নিশ্চিত করা হবে।
(গ) কারখানা শ্রমিক, অফিস কর্মচারী ও গৃহহীনদের জন্য বাসসস্থানের উপযুক্ত ব্যবস্থা করা এবং বাসস্থানগুলিতে স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থা করা ও সীমিত আয়ের লোকদের সংগতির মধ্যে বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
(ঘ) আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা (আইএলও)-র কনভেনশন অনুযায়ী সকল কল কারখানা প্রতিষ্ঠানে ও কৃষি কাজে নিয়োজিত শ্রমিকসহ সকল শ্রমিক কর্মচারীর অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
শ্রমিক নিয়োগ স্থায়ী অধ্যাদেশ ১৯ (ক) আইনের ধারা, আই আর ও ৭ (ক) ধারাসহ সমস্ত কালাকানুন বাতিল করা হবে।
৬। চিকিৎসা।
(ক) জনগণের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা ও সহজলভ্য করা এবং চিকিৎসাকে সার্বজনীন করার জন্য মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এ সমস্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিনামূল্যে পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ করা, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহ নিয়মিত করা, প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও সেবিকা নিয়োগ করা এবং সামগ্রিকভাবে চিলিৎসা ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনা করা হবে।
(খ) অনাথ, আতুর, পংগু ও প্রবীনদের দায়-দায়িত্ব বহন করবে সরকার।
৭। শিক্ষা সংস্কৃতি।
(ক) সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজির ধারক ও বাহক অশ্লীল, অশোভন, অগণতান্ত্রিক ও কর্মবিমুখ সংস্কৃতির বিলোপ সাধন করা হবে এবং তার স্থলে শালীন, শোভন, কর্মপ্রেরণাময় ও জাতীয় গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রবর্তন করা হবে তার বিকাশ ঘটানো হবে।
(খ) মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানের নীতি কার্যকর করে, ঔপনিবেশিক আমল থেকে প্রচলিত গণবিরোধী ও অবৈজ্ঞানিক শিক্ষা ব্যবস্থা বাতিল করে তার স্থলে সার্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক গণমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।
(গ) শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে সকল প্রকার আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করে তার স্থলে সম্পূর্ণরূপে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করা হবে এবং শিক্ষকদের শিক্ষাগত মানোন্নয়নে রাষ্ট্রীয় সহায়তার নিশ্চয়তা বিধান করা হবে।
(ঘ) নির্দিষ্ট একটা মান পর্যন্ত শিক্ষাকে সকল নাগরিকের জন্য বাধ্যতামূলক করা হবে এবং মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক করা হবে।
(ঙ) সকল পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের পেশাগত মানোন্নয়নের জন্য বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হবে এবং ব্যাপক হারে পাঠাগার স্থাপন কর হবে।
(চ) শিক্ষাক্ষেত্রে শ্রেণীগত বৈষম্য দূর করা হবে। বর্তমানে প্রচলিত একাধিক ধরনের পাঠ্যক্রমের প্রচলিত শিক্ষানীতি সম্পূর্ণভাবে বর্জন করে এক ও অভিন্ন পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা ও কার্যকর করা হবে।
৮। নারী সমস্যা।
(ক) পুরুষ ও নারীর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, নারী-পুরুষের মধ্যকার সকল প্রকার বৈষম্য দূর করা এবং নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
(খ) নারী শ্রমিক ও যে কোন কাজে রত সকল মহিলার গর্ভাবস্থায় প্রসবের আগে ও পরে ২ মাস করে ৪ মাসের সবেতন ছুটির ব্যবস্থা করা হবে। কাজ করার সময় মায়েদের অবর্তমানে শিশুদের তদারক করার জন্য নার্সারীস্কুল খোলা হবে।
৯। জাতি সমস্যা।
সংখ্যালঘু জাতিসত্ত্বাসমূহের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও বিচ্ছিন্ন হওয়ার অধিকার স্বীকার রে নেওয়া হবে। বাঙালী জাতিসত্ত্বার বিকাশ ও সমস্ত সংখ্যালঘু জাতিসত্ত্বার বিকাশ একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হবে না, হবে পরিপূরক। এই সমস্ত সংখ্যালঘু জাতিসত্ত্বার ভাষা, ইতিহাস, কৃষ্টিকে বিকশিত করে তোলা হবে। উগ্র বাঙালী জাতীয়তাবাদের সমস্ত রকম প্রকাশের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা ও তাকে বাতিল করা হবে। সাথে সাথে সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হবে।
১০। বন্যা সমস্যা বন্যা নিয়ন্ত্রণ।
(ক) বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে।
(খ) উপযুক্ত ড্রেজিং ব্যবস্থা চালু এবং ত্রুটিযুক্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা বাতিল করে সেচ ব্যবস্থাসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণের সুষ্ঠু বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
১১। ধর্ম।
এদেশের জনগণের ধর্মীয় অধিকারসমূহকে পরিপূর্ণভাবে স্বীকার ও রক্ষা করা হবে। প্রত্যেকের ধর্মীয় অধিকার পালনের ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা বিধান করা হবে কিন্তু ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। সমস্ত রকমের সাম্প্রদায়িকতা উচ্ছেদ করা হবে।
১২। পররাষ্ট্রনীতি।
(ক) বিশ্বের দেশে দেশে সাম্রাজ্যবাদ, ইহুদীবাদ, বর্ণবাদ ও স্বৈরতন্ত্র বিরোধী জনগণের গণতান্ত্রিক ও বিপ্লবী সংগ্রামে একাত্মতা প্রকাশ, সমর্থন ও পরিস্থিতি অনুযায়ী সহযোগিতা করা হবে।
(খ) মার্কিন সাম্রাজ্যবাদসহ সকল সাম্রাজ্যবাদ, সাম্রাজ্যবাদের দালাল ভারত সরকারসহ বিদেশের সাথে সকল ধরনের অসম অসম্মানজনক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ও সাংস্কৃতিক ইত্যাদি চুক্তি বাতিল করা হবে।
১৩। বিবিধ।
(ক) বকেয়া সকল প্রকার কৃষি ঋণ মওকুফ করে সহজ শর্তে কৃষি ঋণ প্রদান ও ঋণ আদায়ের ক্রোকী পরোয়ানা জারী করে কৃষককে হয়রানী ও জমি থেকে উচ্ছেদ বন্ধ করা হবে।
(খ) ভূমি উন্নয়নের নামে সকল প্রকার অন্যায্য কর আদায় বন্ধ করা হবে।
(গ) সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্তবাদ বিরোধী প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর থেকে পুলিশী নির্যাতন বন্ধ করা, কারাগারে আটককৃত সকল রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্ত করা, বিনা বিচারে কারাগারে অন্তরীণ রাখা বন্ধ করা, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হুলিয়া প্রত্যাহার করা এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করা হবে।
(ঘ) বাংলাদেশে সকল প্রকার সাম্রাজ্যবাদী শোষণ বন্ধ করার লক্ষ্যে বিদেশী সাহায্য সংস্থা, এনজিও এবং তাদের তল্পীবাহকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনতাকে সচেতন করা এবং তাদের তৎপরতা প্রতিরোধ করা হবে।
(ঙ) ঘুষ, দূর্নীতি, প্রশাসনিক ও পুলিশী হয়রানী, গুন্ডামী ও মাস্তানী প্রতিহত করা হবে।
উপরোক্ত কর্মসূচিকে কার্যকরী করার আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলা, বিকশিত করে তোলা ও জয়যুক্ত করার জন্য আজ এগিয়ে আসতে হবে সমস্ত সাম্রাজ্যবাদ, সমন্তবাদ ও আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজি বিরোধী শ্রেণী, শক্তি ও ব্যক্তিকে। ইতিহাস আজ ামাদের উপর এ ঐতিহাসিক দায়িত্ব অর্পণ করেছে। আসুন এদেশের মহান সন্তান হিসেবে এ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা দালাল পুঁজি মুক্ত এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি। একথা সত্য যে, মুক্তির সূর্য তোরণকে উদ্দেশ্য করে আমাদের যে যাত্রা সে পথে রয়েছে অনেক চড়াই-উৎরাই, সঙ্গে সঙ্গে পথ হল আঁকা-বাঁকা এবং পথে রয়েছে কাঁটা বিছানো। এই পথে অগ্রসর হতে রক্ত ঝরবে অঝোরে কিন্তু সমস্ত রক্ত, অশ্রু ও বেদনা ভিতর দিয়ে জন্ম নেবে মুক্তির লাল সূর্য। তাই এই পথই আমাদের পথ।