গঠনতন্ত্র
আদর্শ, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য
(১) এদেশে বা উপমহাদেশে কোথাও কখনো প্রকৃত গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা ছিলো না এবং এখনো নেই। উপমহাদেশের সর্বত্র ঔপনিবেশিক সামন্ততান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র নয়াঔপনিবেশিক আধাসামন্ততান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছে মাত্র। এ দেশে রাষ্ট্রযন্ত্রের যে সব প্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠান আছে বা ছিলো তার কোনটিই প্রকৃত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান নয়। এ দেশে গণতন্ত্রের নামে ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শ্লোগানে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন হয়েছে এবং হচ্ছে। প্রকৃতার্থে এই সকল আন্দোলনের অধিকাংশই সঠিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন নয়। সুতরাং জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনগণের বিভিন্ন অংশের আন্দোলনকে জাতীয় পর্যায়ের আন্দোলনে রূপ দেওয়ার উপলব্ধির ভিত্তিতে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট জন্ম নেয়।
(২) জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা দালাল পুঁজি বিরোধী সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক আদর্শ ও মূল্যবোধ প্রচারের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে গঠিত একটি ফোরাম।
(৩) এ দেশের নয়াঔপনিবেশিক আধাসামন্ততান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্রের ও এ ধরণের স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রযন্ত্রের নিয়ন্ত্রণলাভে অভিলাসীদের স্বরূপ উন্মোচন করা, সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ-আমলা দালাল পুঁজি বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার তাৎপর্য জনসমক্ষে তুলে ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সমস্যাবলীর ভিত্তিতে আন্দোলন করা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। ফ্রন্টেরগঠন প্রক্রিয়া
(৪) এই ফোরামের নাম হবে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট। ইংরেজী পরিভাষায় National Democratic Front সংক্ষেপে NDF (এনডিএফ)।
(৫) এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকায় থাকবে।
(৬) সংগঠনের পতাকা– পতাকার রং হবে গাঢ় লাল। পতাকার উপরের দিকে বাম কোণে থাকবে সাদা রং-এর পাঁচ কোণ বিশিষ্ট তারকা। পতাকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত হবে ৩ঃ২।
(৭) সদস্য হবার যোগ্যতা
(ক) কমপক্ষে ১৮ বৎসর ও তার উর্ধ্বে যে কোন বয়সের সুস্থ সক্ষম সক্রিয় গণমুখী বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক, নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল স্তরের ব্যক্তি, গোষ্ঠি বা শ্রেণী ও গণসংগঠন, পেশাজীবী সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টর ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্র ও কর্মসূচির প্রতি আস্থা স্থাপন করলে এবং সে অনুযায়ি কাজ করতে ইচ্ছুক থাকলে তিনি এ সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন।
(খ) প্রাথমিক সদস্য হবার জন্য ৩ (তিন) টাকা মাত্র চাঁদা দিতে হবে এবং প্রতি দুই বছরে ১ (এক) টাকা মাত্র চাঁদা প্রদান করে সদস্যপদ নবায়ন করতে হবে।
(গ) বিভিন্ন কমিটি কর্তৃক আদায়কৃত চাঁদার ১/৪ অংশ উচ্চতর কমিটিকে প্রদান করতে হবে। প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহের আদায়কৃত চাঁদার ২৫% কেন্দ্রীয় কমিটিকে প্রদান করতে হবে।
(৮) জাতীয় কাউন্সিল:
(ক) প্রত্যেক সাংগঠনিক জেলা ও নগরের প্রতি ৫০ (পঞ্চাশ) জন প্রাথমিক সদস্য হতে একজন কাউন্সিলার মনোনীত হবে।
ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সকল কর্মকর্তা ও সদস্য পদাধিকার বলে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে পরিগণিত হবেন। ফ্রন্টের সাথে তালিকাভূক্ত প্রত্যেকটি গণসংগঠন ও শ্রেণী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সকল কর্মকর্তা ও সদস্যগণ পদাধিকার বলে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলার হিসেবে গণ্য হবে। এ ভাবে মনোনিত সদস্যবৃন্দ সম্মিলিত ভাবে জাতীয় কাউন্সিল বিবেচিত হবে। বিশেষ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কমিটি নির্দিষ্ট সংখ্যক কউন্সিলার মনোনিত করতে পারবেন। তবে মনোনিত কাউন্সিলারের সংখ্যা কেন্দ্রীয় কমিটির এক-পঞ্চমাংশের বেশি হবে না।
(খ) জাতীয় কাউন্সিল নীতি নির্ধারণের ব্যাপারে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হবে। সংগঠনের ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্র ও কর্মসুচির পরিবর্তন, পরিবর্ধন করার ক্ষমতা একমাত্র এই কাউন্সিলেরই থাকবে। কাউন্সিল কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করবে। কাউন্সল কর্তৃক নির্ধারিত নীতি অনুসারে কেন্দ্রীয় কমিটি তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে ও কেন্দ্রীয় কমিটি তার সমস্ত কার্যকলাপের জন্য কাউন্সিলের নিক জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। প্রতি ২ বছর অন্তর একবার কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
(গ) কমপক্ষে কাউন্সিল অধিবেশনের ৩ মাস পূর্বে ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির কাউন্সিল অধিবেশনের তারিখ নির্ধারণ করবে এবং প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাদি গ্রহণ করার জন্য সকল মহলকে নোটিশ প্রদান করবে। এক-তৃতীয়াংশের উপস্থিতি কোরাম বলে গণ্য হবে।
(ঘ) বিশেষ পরিস্থিতির উদ্ভব হলে অথবা জাতীয় কাউন্সিল ১/৩ (এক তৃতীয়) অংশ সদস্য লিখিত আবেদন জানালে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উক্ত আবেদনের ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে কমপক্ষে ২১ (একুশ) দিনের নোটিশে বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করবেন। কাউন্সিলে ২/৩ (দুই তৃতীয়) অংশ কাউন্সিলার উপস্থিত হলে কাউন্সিল বৈধ বিবেচিত হবে।
(৯) কেন্দ্রীয় কমিটি।
(ক) সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা দালাল পুঁজি বিরোধী লড়াইতে নিয়োজিত সমস্ত গণসংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি ও ব্যক্তিদের নিয়ে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের কেন্দীয় কমিটি গঠিত হবে। এতে প্রতিটি গণসংগঠন ও শ্রেণী সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।
(খ) সভাপতি ও ৬ জন হ-সভাপতি মোট ৭ (সাত) জন সমন্বয়ে সভাপতিমন্ডলী গঠিত হবে। সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে অন্যান্য সম্পাদকের সমন্বয়ে মোট ৯ (নয়) জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে সম্পাদকমন্ডলী। অবশিষ্ট নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে গণ্য হবেন ও কাজ করবেন। সভাপতিমন্ডলীর সভাতে সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত থাকবেন এবং সম্পাদকমন্ডলীর সভাতে সভাপতি পদাধিকার বলে সভাপতিত্ব করবেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে অনুর্ধ্ব ৬১ (একষট্টি) জন। কমিটিতে নিম্নোক্ত কর্মকর্তা নির্বাচিত হবেন।
সভাপতি- ১ জন, সহ-সভাপতি- ৬ জন, সাধারণ সম্পাদক- ১ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক- ২ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক- ১ জন, প্রচার সম্পাদক- ১ জন, দপ্তর সম্পাদক- ১ জন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- ১ জন, যুব বিষয়ক সম্পাদক- ১ জন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক- ১ জন, কোষাধ্যক্ষ- ১ জন ও সদস্য সংখ্যা- ৪৪ জন, সর্বমোট ৬১ (একষট্টি) জন।
(১০) কেন্দ্রীয় কমিটির ক্ষমতা:
(ক) নিম্নতর কমিটিসমূহকে অনুমোদন দান, নিম্নতর কমিটিসমূহের সম্মেলন, সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ ও নির্বাচনের নির্দেশ প্রদান এবং প্রয়োজন বোধে কোন কমিটি বাতিল, তদস্থলে এডহক কমিটি গঠনের এখতিয়ার এই কমিটির থাকবে। জাতীয় কাউন্সিল বা জরুরী পরিস্থিতিতে বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করতে পারবে। প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।
(খ) সংগঠনের কোন সদস্য সংগঠনের আদর্শ, উদ্দেশ্য, ঘোষণাপত্র অথবা গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ করলে বা লিপ্ত থাকলে তার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে শাস্তিমূলক ববস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে শাস্তি প্রদানের পূর্বে অভিযুক্ত সদস্যদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ও আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার থাকবে। কেন্দ্রীয় কমিটি সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনবোধে নিয়ম-কানুন প্রণয়ন করতে পারবেন। তবে তা কোন ক্রমেই গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি হবে না।
(১১) কেন্দ্রীয় কমিটির সভা:
(ক) সভাপতির সাথে পরামর্শ করে অথবা সভাপতির নির্দেশে সাধারণ সম্পাদক সভা আহ্বান করবে। সাধারণ সম্পাদক অনুপস্থিত থাকলে বা সভা আহ্বান করতে না চাইলে সভাপতি নিজেই বা তার নির্দেশে সহ-সাধারণ সম্পাদক সভা আহ্বান করতে পারবেন।
(খ) আলোচ্যসূচি, স্থান ও সময়ের উল্লেখ করে কমপক্ষে ১০ (দশ) দিনের নোটিশে সভা আহ্বান করবে। জরুরী পরিস্থিতি উদ্ভব হলে অথবা সময়ের অভাবে সংবাদপত্র মারফত নোটিশ দেয়া যাবে। ১/৩ (এক তৃতীয়) অংশ উপস্থিত হলে সভার কোরাম হবে।
(১২) কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মকর্তাবৃন্দের ক্ষমতা ও দায়িত্বঃ
(ক) সভাপতি- সভাপতি সংগঠনের প্রধান হিসেবে গণ্য হবেন। সংগঠনের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না সে সম্পর্কে লক্ষ্য রাখার মূল দায়িত্ব তার ওপর ন্যস্ত। তিনি জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করবেন, আবশ্যক মত গঠনতন্ত্রের যে কোন ধারা ব্যক্ত করে রুলিং দিতে পারবেন। সংগঠনের কোন সদস্য সংগঠনের আদর্শ, উদ্দেশ্য, ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ করলে বা লিপ্ত থাকলে এবং সংগঠনসমূহ ক্ষতিকারক হলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। তবে এ পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদন করে নিতে হবে।
(খ) সহ-সভাপতি- সভাপতির অনুপস্থিতিতে সহ-সভাপতিবৃন্দের মধ্য হতে ক্রমানুসারে একজন সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। কোন কারণবশতঃ সভাপতি ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিন বা তদূর্ধ্বকাল সংগঠনের কার্যক্রম হতে অনুপস্থিত থাকলে সে ক্ষেত্রে ক্রমানুসারে একজন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক নিয়োজিত হবেন। এ ছাড়া সহ-সভাপতিবৃন্দ সভাপতির নির্দেশিত ও কেন্দ্রীয় কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।
(গ) সাধারণ সম্পাদক- তিনি হবেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা। সভাপতির সহিত পরামর্শ করে সভাপতি কর্তৃক নির্দেশিত হয়ে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কার্য পরিচালনা করবেন। তিনি জাতীয় কাউন্সিল পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভা আহ্বান করবেন। প্রত্যেকটি সভায় সংগঠনের রাজনৈতিক, সাংঠনিক ও সংগ্রামগত রিপোর্ট পেশ করবেন। অন্যান্য সম্পাদকদের কাজ তদারক করবেন। তাদের কাজকর্মে পরামর্শ দান ও প্রয়োজনবোধে নির্দেশ দিতে পারবেন। সম্পাদকগণের কাজের জন্য তিনি কমিটির নিকট দায়ি থাকবেন। জাতীয় কাউন্সিল পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক গৃহিত সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রমের বাস্তবায়নে তার প্রচেষ্টা হবে সর্বাধিক।
(ঘ) সহ-সাধারণ সম্পাদক- সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে সহ-সাধারণ সম্পাদকের মধ্য হতে ক্রমানুসারে একজন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন। কোন কারণবশতঃ সাধারণ সম্পাদক যদি ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিন অথবা তদূর্ধ্বকাল অনুপস্থিত থাকেন সে ক্ষেত্রে সহ-সাধারণ সম্পাদকের মধ্য হতে একজন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রূপে কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত হবেন। এছাড়াও তারা তাদের নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করবেন।
(ঙ) সাংগঠনিক সম্পাদক- সাধারণ সম্পাদকের সহিত পরামর্শ করে সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
(চ) প্রচার সম্পাদক- সংগঠনের সকল প্রকার প্রচার ও প্রকাশনার দায়িত্ব পালন করবেন। অন্য কোন দায়িত্ব অর্পিত হলে তাও পালন করবেন।
(ছ) দপ্তর সম্পাদক- কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিচালনার সকল দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া অন্য কোন দায়িত্ব অর্পিত হলে তাও পালন করবেন।
(জ) সাংস্কৃতিক সম্পাদক- সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে ভূমিকা পালন করবেন। অন্য কোন দায়িত্ব অর্পিত হলে তাও পালন করবেন।
(ঝ) যুব বিষয়ক সম্পাদক- যুব সমাজকে সচেতন ও সংগঠিত করার কাজে নিয়োজিত থাকবেন। এ ছাড়া অন্য কোন দায়িত্ব অর্পিত হলে তাও পালন করবেন।
(ঞ) মহিলা বিষয়ক সম্পাদক- নারী আন্দোলন গড়ে তুলবার জন্য ভূমিকা পালন করবেন। এছাড়া অর্পিত দায়িত্ব পালন পালন করবেন।
(ট) কোষাধ্যক্ষ- সংগঠনের আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখবেন। তহবিল গঠন ও সংরক্ষণে যতœবান হবেন। তহবিল সংক্রান্ত ধারায় বর্ণিত ক্ষমতা অনুযায়ি কোষাধ্যক্ষ তার দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করবেন।
(১৩) জেলা ও মহানগর– প্রত্যেক সাংগঠনিক জেলায় একটি জেলা কমিটি থাকবে। ৩ জন সহ-সভাপতি এবং ২ জন সহ-সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় কমিটির অনুরূপ মোট ১৩ জন কর্মকর্তা ও ২৮ (আটাশ) জন সদস্য নিয়ে সর্বোচ্চ মোট ৪১ (একচল্লিশ) জনের জেলা কমিটি গঠিত হবে। মহানগর কমিটি, জেলা কমিটির অনুরূপ ও সমমর্যাদা সম্পন্ন হবে। প্রত্যেক জেলা ও মহানগর কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। প্রতি দুই মাস অন্তর একবার অর্থাৎ বৎসরে ন্যূনতম ৬ (ছয়) বার জেলা/মহানগর কমিটির সভা করতে হবে।
(১৪) উপজেলা কমিটি– জেলা কমিটির অনুরূপ কর্মকর্তা ও ১৮ (আটার) জন সদস্য নিয়ে সর্বোচ্চ ৩১ সদস্যের উপজেলা কমিটি গঠিত হবে। প্রতি মাসে একবার অর্থাৎ বৎসরে উপজেলা কমিটি ন্যূনতম ১২টি সভা করতে হবে। প্রত্যেক উপজেলা কমিটি জেলা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।
(১৫) ইউনিয়ন কমিটি– উপজেলা কমিটির অনুরূপ কর্মকর্তা ও সদস্য নিয়ে গ্রামাঞ্চলে ইউনিয়ন কমিটি এবং শহরাঞ্চলে পৌরসভা/ ওয়ার্ড কমিটি গঠিত হবে। প্রতি ১৫ (পনের) দিন অন্তর একবার অর্থাৎ প্রতিমাসে ন্যূনতম ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড কমিটিকে ২(দুই)টি সভা করতে হবে। প্রত্যেক ইউনিয়ন/পৌরসভা ও ওয়ার্ড কমিটি উপজেলা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।
(১৬) সাংগঠনিক তহবিলঃ
(ক) কেন্দ্রীয় কমিটিসহ প্রত্যেক শাখা সংগঠনের নিজস্ব তহবিল থাকবে। সদস্যদের চাঁদা ও সমর্থক-দরদীদের বিভিন্ন সময়ে অথবা এককালীন দেয় চাঁদার মাধ্যমে অর্জিত টাকা দ্বারা এই তহবিল গঠিত হবে। প্রাথমিকভাবে প্রত্যেক কমিটির সংগৃহিত অর্থের তহবিলের পরিমাণ ৫০০ (পাঁচ শত) টাকার কম হলে সংগঠনের দৈনন্দিন খরচ বাবদ কিচু টাকা সম্পাদকের হাতে রেখে বাকী টাকা কোষাধ্যক্ষের নিকট গচ্ছিত থাকবে। সংগৃহিত টাকার পরিমাণ ৫০০ (পাঁচ শত) টাকা বা তদূর্ধ্ব হলে যে কোন ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় কার্যকরী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংগঠনের নামে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের এবং কোষাধ্যক্ষের যুক্ত স্বাক্ষরে যথা নিয়মে জমা রাখতে হবে। তাদের যে কোন একজন অনুপস্থিত থাকলে সভাপতির যুক্ত স্বাক্ষরে একাউন্ট পরিচালনা করা যাবে। ব্যাংকে কখন কত টাকা জমা হলো তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে সাথেই জানাতে হবে। ব্যাংক হতে কি পরিমাণ টাকা কখন কেন উঠানো হলো তার রিপোর্ট টাকা উঠাবার এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পাদক/সভাপতিকে লিখিতভভবে জানাবেন।
(খ) সংগঠনের দৈনন্দিন কার্য পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ৫০ (পাঁচ শত) টাকা, জেলা কমিটির সম্পাদক ৩০০ (তিন শত) টাকা, উপজেলা কমিটির সম্পাদক ২০০ (দুই শত) টাকা ও ইউনিয়ন কমিটির সম্পাদক ১০০ (এক শত) টাকা মাত্র রাখতে পারবেন। দৈনন্দিন খরচের টাকা ব্যতীত অন্যান্য খরচের জন্য ব্যাংক হতে উঠানো টাকা কোন অবস্থাতেই ৭ (সাত) দিনের বেশি হাতে গচ্ছিত রাখা যাবে না।
(গ) সংগঠনের যাবতীয় আয়-ব্যয়ের হিসাব জাতীয় কাউন্সিল পরিষদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে অনুমোদন সাপেক্ষে কার্যকরী কমিটির প্রত্যেক সভায় পাশ করাতে হবে।